বিএসএফ লাশ দিল ১৪ দিন পর

বিএসএফের গুলিতে নিহত হলে সীমান্তের ওপারে নিয়ে যাওয়া বাংলাদেশি যুবকের লাশ ফেরত দিয়েছে দুই সপ্তাহ পর।

নীলফামারী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Sept 2019, 06:20 PM
Updated : 17 Sept 2019, 06:20 PM

মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম সীমান্তে বিজিবির উপস্থিতে নীলফামারীর ডিমলা থানা পুলিশের কাছে বাবলু মিয়ার মৃতদেহ হস্তান্তর করে বিএসএফ।

তবে আহত আটক কিশোর সাইফুল ইসলামকে (১৪) ফেরত দেয়নি বিএসএফ।

গত ৩ সেপ্টেম্বর লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিহত হন বাবলু মিয়া (২৫)।

ডিমলা থানসার ওসি সেখানেই বাবা নূর মোহাম্মদের কাছে বাবলুর মৃতদেহ বুঝিয়ে দেন। ছেলের মৃতদেহ বুঝে পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন বাবলুর বাবা।

বাবলু মিয়ার বাড়ি নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের কালিগঞ্জ গ্রামে। আটক সাইফুল ইসলাম একই উপজেলার পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের ঝারশিংহের চর গ্রামের গোলজার হোসেনের ছেলে এবং পূর্বছাতনাই উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র।

মরদেহ হস্তান্তরের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইসাহাক মণ্ডল, ডিমলা থানার ওসি মফিজ উদ্দিন শেখ, পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান, পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জাকির হোসেন, দহগ্রাম পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক আবু হানিফ।

ভারতীয় ৫৪ বিএসএফের উপ-অধিনায়ক এসওয়াই খেঙ্গারু, কোচবিহার জেলার কুচলিবাড়ি থনার সার্কেল কর্মকর্তা পুরান রায় ও থানা পুলিশের কর্মকর্তা সুবাস চন্দ্র রায়ও উপস্থিত ছিলেন।

বাবলুর মৃতদেহ বুঝে পাওয়ার পর ডিমলা থানার ওসি মফিজ উদ্দিন শেখ বলেন, “সেখানেই বাবলু মিয়ার মৃতদেহ তার বাবা নূর মোহাম্মদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের কালিগঞ্জ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান তার বাবা নূর মোহাম্মদ।”

এদিকে বিএসএফের কাছে আটক থাকা আহত সাইফুলের বাবা গোলজার হোসেন বলেন, “বাবলুর মৃতদেহ ফেরৎ পেয়েছে তার পরিবার। এখন সাইফুলকে ফেরতের দাবি জানাচ্ছি।”

এ বিষয়ে ডিমলা পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, “আহত সাইফুলকেও ফেরৎ দিতে চেয়েছে বিএসএফ। বর্তমানে তাকে ভারতের একটি শিশু সংশোধনাগারে রাখা হয়েছে। সেখান থেকে তিন মাস পর তাকে ফেরৎ পাঠাবে বলে জানিয়েছে বিএসএফ।”

গত ৩ সেপ্টেম্বর সকালে বাবলু মিয়া ও সাইফুল ইসলাম গরুর ঘাস কাটতে বের হয় বাড়ি থেকে। এ সময় তাদের বাড়ি পার্শ্ববর্তী লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম সীমান্তে ঘাস কাটার সময় তাদেরকে গুলি করে ভারতের উড়াল ক্যাম্প বিএসএফ সদস্যরা। গুলিতে বাবলু মিয়া নিহত এবং সাইফুল আহত হলে সাথে সাথে হতাতদের নিয়ে যায় বিএসএফ। সে থেকে নিহত বাবলুর মৃতদেহ ও আহত সাইফুলকে ফেরত চায় এলাকাবাসীসহ তাদের পরিবার। এমন দাবিতে তারা এলাকায় মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করে।