মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলার ভাওয়াল মির্জাপুর কলেজের সীমানা প্রাচীরের উপর দিয়ে যাওয়া ৩৩ হাজার কেভি বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে।
খবর পেয়ে জয়দেবপুর ফায়ার সার্ভিদের দুইটি ইউনিট গিয়ে আগুন নেভায়। আগুন নেভানো হলেও গ্যাস নির্গমন এখনও বন্ধ হয়নি। যেকোনো ধরনের স্ফূলিঙ্গ থেকে ভয়াবহ আগুন ধরে যেতে পারে।
এ স্থানের পাশ দিয়ে জনগণের চলাচলের পথ রয়েছে। ছোটো গাড়িও চলে এই রাস্তায়। স্থানীয়রা বাঁশ ফেলে ওই স্থানের পাশ দিয়ে যাওয়া রাস্তা বন্ধ করলেও প্রশাসন থেকে সতর্কতামূলক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
ভাওয়াল মির্জাপুর কলেজের অধ্যক্ষ মো. এনামুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কলেজের পূর্ব পাশের সীমানা প্রাচীরের উপর দিয়ে গাজীপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির ৩৩ হাজার কেভির লাইন চলে গেছে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিদ্যুৎ যাওয়া আসা করছিল। ১১টার দিকে পাশে থাকা ট্রান্সফরমারে একটি বিকট শব্দে স্পার্কিং হয়। বিষয়টি জানাতে স্থানীয় পল্লীবিদ্যুৎ অফিসে একাধিকবার ফোন করলেও তা কেউ রিসিভ করেনি।
“এর প্রায় ১০ মিনিট পর আবার বিকট শব্দে বিদ্যুতের তারে স্পার্কিং হয় এবং ৩৩ হাজার ভোল্টের একটি তার ছিঁড়ে নিচে থাকা তিতাসের সরবরাহ লাইনের ছিদ্রপথে নির্গত গ্যাসের উপড় পড়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হয়। পরে স্থানীয় গ্যাস অফিস ও ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়।”
জয়দেবপুর ফায়ার স্টেশনের জ্যেষ্ঠ স্টেশন অফিসার মো. আবু ইউসুফ বলেন, কলেজের সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে তিতাস গ্যাসের একটি সরবরাহ লাইন চলে গেছে। এ লাইনটির স্থানে স্থানে বড় ধরনের লিকেজ রয়েছে। ওই লিকেজ দিয়ে প্রচণ্ড বেগে গ্যাস বেরুচ্ছে। মঙ্গলবার সকালে বিদ্যুতের ছেঁড়া তার ওই নির্গত গ্যাসের উপর পড়ে গেলে স্পার্কিংয়ের আগুন থেকেই অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হয়।
“আগুনে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে পাইপ লাইনের ফুটো বন্ধ না করলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।”
বিভিন্ন সময় ওই লাইনের ফুটোর গ্যাসে ছোট-বড় অগ্নিকাণ্ড হচ্ছে। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে জানালেও তারা কর্ণপাত করেনি বলে অভিযোগ শাহজাহানের।
এ ব্যাপারে বিডিফুড লিমিটেডর ব্যবস্থাপক বাহাদুর শাহ বলেন, “আমরা ২০১২ সালের দিকে তিতাসের সরবরাহ লাইনটি থেকে সংযোগ নিলেও পর্যাপ্ত গ্যাস না পাওয়ায় কিছুদিন পর তা তিতাস কর্তৃপক্ষের কাছে সারান্ডার করে দেই।”
গাজীপুর তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্টিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড অফিসের সুপারভাইজার সামশুল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “ওই লাইনটি বন্ধ করার জন্য ভাল্বটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই মঙ্গলবার গ্যাস লাইনটির সংযোগ বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। বুধবার সকালে লোকবল নিয়ে লাইনটি উচ্ছেদ করা হবে।”
গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর ডিজিএম মো. জিল্লুর রহমান বলেন, “রাতে বৃষ্টিপাতের সময় ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে মূল লাইনে সমস্যা হলে তা বন্ধ রেখে বিকল্প হিসেবে কলেজ রুটের লাইনটি ব্যবহার করা হচ্ছিল। এতে ওভারলোড হওয়ায় লাইনের জাম্পারে স্পার্কিং হয়ে বিদ্যুতের তার বিচ্ছিন্ন হয়ে নিচে পড়ে যায়। পরে মঙ্গলবার দুপুরে তার মেরামত করে লাইনটি সচল করা হয়েছে।”
গাজীপুর জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম বিকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিষয়টি এইমাত্র আপনার কাছে শুনেছি। আমি দেখছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”