বেনাপোলে পাটবাড়ী আশ্রমে ‘নির্বাণ তিথি মহোৎসব’

যশোরের বেনাপোলে পাটবাড়ী আশ্রমে ভক্ত সম্মিলনের মধ্য দিয়ে ‘নির্বাণ তিথি মহোৎসব’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আসাদুজ্জামান আসাদ, বেনাপোল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Sept 2019, 05:31 PM
Updated : 12 Sept 2019, 05:34 PM

মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বালন, মঙ্গলাচরণ, গুরুবন্দনাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় আচারের মধ্য দিয়ে বুধবার বেলা ১১টায় এ অনুষ্ঠান শুরু হয়। শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার বিকালে।  

এটা এ আশ্রমের ৪৯৫তম উৎসব বলে জানান আশ্রমের সাধারণ সম্পাদক ফণীভূষণ পাল।

তিনি বলেন, “জাতিভেদ, কুসংস্কার, অনাচারসহ নানা রকম নির্যাতনে মানুষ যখন অতীষ্ঠ হয়েছিল, সে সময় হরিদাস ঠাকুর সাতক্ষীরার কলারোয়া থানার কেড়াগাছি গ্রামে জন্ম নেন। তিনি পদ রচনা করে, প্রচার চালিয়ে, জনসচেতনতা সৃষ্টি করে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেন। সমস্যা থেকে মুক্তি বা নির্বাণ লাভের আশায় মানুষের অন্তরে মুক্তির আলো জ্বালার চেষ্টা করেন তিনি।”

তার স্মৃতিবিজড়িত এলাকায় ভক্তরা পাটবাড়ী আশ্রম গড়ে তোলেন বলে ফণীভূষণ জানান।

যশোর জেলা শহর থেকে প্রায় ৩৮ কিলোমিটার পশ্চিমে বেনাপোল স্থলবন্দরের কাছে এই আশ্রমে প্রতি বছর ভক্তরা সমবেত হন।

উৎসবে থাকে হরিদাস ঠাকুরের জীবনী আলোচনা, ভাগবত আলোচনা, কীর্তন, ভক্তিগীতি ও পদাবলি কীর্তন প্রভৃতি।

ফণীভূষণ বলেন, উৎসবটি ভক্ত-অনুরাগীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। বাংলাদেশের অন্যতম হিন্দু তীর্থস্থান পাঠবাড়ি আশ্রম। দেশ-বিদেশ থেকে আসা হাজারো ভক্তের আগমনে মুখরিত হয় প্রতি বছর।

“এখানে প্রায় ৬০০ বছরের মাধবীলতা আর সুপ্রাচীন তমাল বৃক্ষ রয়েছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে প্রাচীন, ঐতিহ্যবাহী এ আশ্রমে হিন্দু সম্প্রদায়ের সকল ধর্মীয় অনুষ্ঠান জাঁকজমকভাবে পালিত হয়। দেশের ৬৪ জেলা, বিভাগীয় শহর ও ভারতসহ অন্যান্য দেশের হাজার হাজার ভক্ত-অনুরাগী এখানে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেন।”

আশ্রমের প্রচার সম্পাদক আনন্দ দেবনাথ বলেন, এখানে একটি জাদুঘর ও মাটির নিচে রয়েছে গিরিগোবর্ধন মন্দির। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ও দেশ-বিদেশ থেকে শত শত দর্শনার্থী দেখতে আসেন।

আশ্রমের সভাপতি তাপস কুমার বিশ্বাস বলেন, আশ্রমের পক্ষ থেকে দেশ-বিদেশ থেকে আসা সব ভক্ত বা দর্শণার্থীদের এখানে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। নিরাপত্তার জন্য প্রশাসন সার্বিক সহযোগিতা করে থাকে।

“এখানে হিন্দু-মুসলমান কোনো ভেদাভেদ থাকে না। সব ধর্মের মানুষের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি  মুখরিত হয়ে ওঠে।”

বেনাপোল বন্দর থানার এসআই পিন্টু লাল দাস বলেন, উৎসবে আগত ভক্তদের নিরাপত্তায় সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব পালন করছেন হিন্দু ধর্মালম্বী লোকজন। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। যেকোনো ঘটনা মোকাবিলায় প্রশাসন তৎপর রয়েছে।