বখাটের ‘এসিডের ভয়ে’ বিদ্যালয়ে যাচ্ছে না স্কুলছাত্রী

টাঙ্গাইলে ‘বখাটের এসিড নিক্ষেপের ভয়ে’ প্রায় একমাস যাবত বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না এক স্কুলছাত্রী।

টাঙ্গাইল প্রতিনিধিএম এ রাজ্জাক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Sept 2019, 04:42 PM
Updated : 7 Sept 2019, 05:42 PM

প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না পেয়ে পৌরসভার গাড়াখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে এসিড মেরে মুখ ঝলসে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে বখাটেরা।

এরা ধনবাড়ী উপজেলার বান্দ্রা গ্রামের এক কিশোর (১৫) ও নুর মুহাম্মদের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন (২০)।

এ ব্যাপরে মেয়েটির পরিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে এখনও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তাদের।

অভিযোগে বলা হয়, সাখাওয়াত ও তার সঙ্গী এক কিশোর দির্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে মেয়েটিকে (১৫) উক্ত্যক্ত করে আসছিল। গত জুলাই মাসে ধনবাড়ী নবাব ইনস্টিটিউটে প্রাইভেট শেষের বাড়ি ফেরার পথে মেয়েটিকে এসিডের বোতল ও চাকু দেখিয়ে ছবি তোলে সাখাওয়াত, মানিক ও তাদের বন্ধুরা।

মেয়েটির বাবা-মা এর প্রতিবাদ করেন। এর জেরে গত ১৫ অগাস্ট মধুপুর আসার পথে ওই কিশোরের বাড়ির কাছে পৌঁছালে তাদের (বাবা-মা) মারধর করে কিশোর ও তার বন্ধুরা। এ ঘটনা প্রথমে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর মো. তোতা মিয়াকে জানালে তিনি সালিশ মীমাংসার কথা বললে টালবাহানা করতে থাকে বখাটেদের অভিবাবক।

এ ব্যাপারে মেয়েটি সাংবাদিকদের বলেন, “প্রথমে কিশোরটি তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়, সাড়া না দিলে কিশোরটির বন্ধু সাখাওয়াতও প্রেমের প্রস্তার দেয়। উভয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় ওরা দুইজন মিলে এসিড নিক্ষেপের ভয় দেখাচ্ছে। গত ১৫ অগাস্ট থেকে আমি বিদ্যালয়ে যেতে পারছি না।”

এই ছাত্রীর বাবা বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম বেনু উত্ত্যক্তকারী কিশোরের চাচাত ভাই হওয়ায় এবং ওই কিশোরের বাবা ধনবাড়ী থানার ওসির বাসার কেয়ারটেকার হওয়ার কারণে কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।

কিশোরটির বাবা ফজল মিয়া বলেন, “আমার ছেলে মেয়েটার ছবি তুলে ভুল করেছে। সেজন্য তো মেয়ের বাবা মফিজ আমার ছেলেকেকে মেরেছে, কিন্তু আমি কিছু বলিনি।”

পৌর কাউন্সিলর মো. তোতা মিয়া বলেন, “দ্বিতীয় নুসরাত দেখতে চাই না। ওসির সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

গাড়াখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম (বেনু) বলেন, “মেয়েটি আমাকে মুখে বলেছে, আমি লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি কিন্তু দেয়নি। ছেলেটি যেহেতু বহিরাগত তাই অভিযোগ পেলে ম্যানেজিং কমিটির সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা ধনবাড়ী থানার এসআই নূরে আলম বলেন, “ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। মেয়ের পক্ষ গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে মীমাংসা করার কথা জানান। তবে মেয়েপক্ষ মামলা করলে উক্ত্যক্তকারীদের গ্রেপ্তার করা হবে।”

গাড়াখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বেলাল উদ্দিন বলেন, “অভিযোগ পেলে ওসির সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”