দুই বছর আগে এই দিনে (২৫ অগাস্ট) রূপা ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হন। বিচারিক আদালতে রায় হলেও হাই কোর্টে এখনও ঝুলে আছে এই মামলার আপিল।
এই হত্যা মামলার বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করে দোষীদের ফাঁসি কার্যকর করার দাবিতে রূপার স্বজনরা রোববার সকালে তাড়াশ প্রেসক্লাবের সামনে কালো ব্যাজ ধারণ করে হাতে ব্যানার নিয়ে মানববন্ধন করেছেন।
মানববন্ধনে রূপার মা হাসনা হেনা বলেন, “রূপার মৃত্যুর দুই বছরেও প্রিয় সন্তানকে ভুলতে পারিনি। রূপাকে গণধর্ষণ ও হত্যা করায় আমরা আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছিলাম, যা নিম্ন আদালতে পেয়েছি। কিন্তু বর্তমানে এ মামলাটির বিচারের দীর্ঘসূত্রতার অবসান চাই। আমি জীবদ্দশায় অভিযুক্তদের শাস্তি দেখে যেতে চাই।”
আসামিদের মধ্যে ফাঁসির দণ্ড হয় ময়মনসিংহের ছোঁয়া পরিবহনের হেলপার শামীম (২৬), আকরাম (৩৫), জাহাঙ্গীর (১৯) ও চালক হাবিবুর রহমানের (৪৫)। বাসটির সুপারভাইজার সফর আলীর (৫৫) সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা হয়।
এছাড়া ছোঁয়া পরিবহনের ওই বাসটি রূপার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়ারও আদেশ প্রদান করা হয়।
এ মামলার বাদী রূপার বড়ো ভাই হাফিজুর রহমান প্রামানিক বলেন, ২০১৮ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল নারী শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল রূপা হত্যা মামলার রায়ে চার আসামির ফাঁসি ও একজনের সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও আর্থিক জরিমানার রায় দেয়।
“এরপর গত বছরের ১৮ই ফেব্রুয়ারি সাজাপ্রাপ্ত সকল আসামি হাই কোর্টে আপিল করেন। এরপর ১৮ মাস পেরিয়ে গেলেও শুনানি শুরু হয়নি।” প্রামানিক।
তিনি বলেন, “আমরা ১৭১ দিন পর মামলার রায় ঘোষণায় সন্তুষ্ট হয়েছিলাম; কিন্তু উচ্চ আদালতে আসামিপক্ষের আপিলের পর মামলাটি ১৮ মাসেও শুনানি না হওয়ায় হতাশ হয়েছি।
২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা শেষে বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে চলন্ত বাসে দলবেঁধে ধর্ষণ শেষে হত্যার পর টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার পঁচিশ মাইল এলাকায় বনের মধ্যে রূপার মরদেহ ফেলে রাখা হয়।
মধুপুর থানা পুলিশ ওই রাতেই অজ্ঞাত পরিচয় নারী হিসেবে তার মরদেহ উদ্ধার করে। পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে রূপার মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করে। দাফনের পরদিন পত্রিকায় প্রকাশিত ছবি দেখে তার ভাই হাফিজুর রহমান মধুপুর থানায় গিয়ে রূপাকে শনাক্ত করেন।
তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম রূপার বোন পপি খাতুনকে সরকারি চাকরি দিয়েছেন। ২০১৭ সালের ১৫ই নভেম্বর অফিস সহকারী হিসেবে সরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বগুড়ায় এসেনসিয়াল ড্রাগসে যোগদান করেছেন পপি।