খুলনায় ফায়ারিং প্রশিক্ষণে লক্ষ্যভ্রষ্ট গুলি, ঘটছে দুর্ঘটনা

খুলনার শিরোমণিতে ফায়ারিং প্রশিক্ষণে বেশ কয়েকটি গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে কিছু দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রাণহানির ঘটনা না ঘটলেও বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে প্রশাসনকেও।

খুলনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 August 2019, 03:46 PM
Updated : 20 August 2019, 09:49 AM

লক্ষ্যভ্রষ্ট এসব গুলি কখনও পুলিশ সদস্যের শরীরে, কখনওবা পথচারীর দেহে আবার কখনও বাড়ির ভিতরে গিয়ে আঘাত করছে।

সর্বশেষ গত রোববার খুলনা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সম্প্রতি পুলিশ সুপার পদে পদন্নোতিপ্রাপ্ত) আনিচুর রহমানের বাসভবনের ভেতরে লেগেছে একটি লক্ষ্যভ্রষ্ট গুলি।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের  অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর) সোনালী সেন বলেন, নগরীর শিরোমণি এলাকায় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) ‘ফায়ারিং বাট’-এ খুলনা মহানগর পুলিশ সদস্যদের বার্ষিক ফায়ারিং প্রশিক্ষণ চলছিল।

“রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে একটি গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পার্শ্ববর্তী কেডিএ আবাসিক এলাকার ৬৫ নম্বর বাড়ির দোতলার সিলিং ফ্যানে গিয়ে লাগে।”

ওই বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন খুলনা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার আনিচুর রহমান।

সোনালী বলেন, ওই সময় তার মেয়ে সেই ঘরে ডাইনিং টেবিলে বসে দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন। এমন সময় লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে আসা একটি গুলি জানালার কাচ ভেদ করে টেবিলের উপরের সিলিং ফ্যানে লাগে। তবে কারও কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

২০১৮ সালের ২৮ নভেম্বর খুলনায় পুলিশের এক নায়েক আবু মুসা (২৫) ফায়ারিং প্রশিক্ষণের সময় গুলিবিদ্ধ হন।

জানালার কাঁচ ভেদ করে ঢোকে বুলেট

পুলিশ কর্মকর্তা সোনালী সেন ওই সময় বলেছিলেন, নগরীর শিরোমণিতে ফায়ারিং প্র্যাকটিস চলছিল। এ সময় এক পুলিশ সদস্যের গুলি বন্দুকের নলের মধ্যে আটকে যায়। নায়েক আবু মুসা আটকে যাওয়া ওই গুলি বের করার চেষ্টা করেন।

“এ সময় আটকে যাওয়া গুলি বের করার চেষ্টাকালে গুলিটি নায়েক মুসার পেটে বিদ্ধ হয়ে তা পিঠ দিয়ে বের হয়ে যায়। তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে মুসাকে হেলিকপ্টারে ঢাকায় পাঠানো হয়।”

আবু মুসা বরিশাল জেলা পুলিশের অস্ত্রাগারে নায়েক হিসেবে চাকরিরত রয়েছেন। ফায়ারিং প্র্যাকটিসের জন্য তিনি খুলনা এসেছিলেন।

মহানগর পুলিশ জানায়, এর আগে ২০১৮ সালের ৩০ নভেম্বর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে বরিশাল জেলার ফায়ারিং প্র্যাকটিস চলছিল। এ সময় মমতাজ বেগম (৬০) নামে এক ভিক্ষুক ওই এলাকা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এ সময় তার পেটে একটি গুলিবিদ্ধ হয়। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি প্রাণে বেঁচে যান।

এ ব্যাপারে খুলনা জেলা পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ বলেন, “যেহেতু ফায়ারিং রেঞ্জের আশেপাশে বাড়িঘর রয়েছে, সেহেতু নিরাপদে কীভাবে ফায়ারিং প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে সে বিষয়ে ভাবতে হবে। এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে।”

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিচুর রহমানের বাড়িতে লক্ষ্যভ্রষ্ট গুলির ঘটনাটি তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার শফিউল্লাহ।

খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিচুর রহমান বলেন, “নিরাপদে ফায়ারিং প্রশিক্ষণের জন্য আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা যে ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন আমি তাদের সাথে একমত পোষণ করছি।”