কারাফেরত ‘উত্ত্যক্তকারী খুন করল’ প্রতিবাদী কিশোরকে

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক উত্ত্যক্তকারী কারাভোগ শেষে ফিরে প্রতিবাদকারী কিশোরকে খুন করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 August 2019, 01:12 PM
Updated : 13 August 2019, 02:31 PM

গত শনিবার ভোর রাতে সরাইল উপজেলার বারজীবিপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে বলে জেলা পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

মঙ্গলবার পাঠানো এই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ ঘটনায় মামলার এজাহারনামীয় তিনজনকে গ্রেপ্তার করার পর তাদের একজন আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

গ্রেপ্তাররা হলেন সরাইলের বড্ডাপাড়ার আবুল ফজলের ছেলে ইমরানুল হাছান সাদী (১৯), বারজীবিপাড়ার মৃত মোতালিব মিয়ার ছেলে নাজিম উদ্দিন (৫৫) ও রফিক মিয়ার স্ত্রী নাজমা বেগম (৪০)।

নিহত ইকরাম হোসেন (১৭) সরাইলের বর্ডার বাজারের শহিদ মিয়ার ছেলে এবং সরাইল ডিগ্রি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি উপজেলার বারজীবিপাড়ায় তার খালাত বোন লাভলি আক্তারের বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করতেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানান, গ্রেপ্তারদের মধ্যে ইমরানুল হাছান সাদী আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন, যিনি সম্পর্কে নিহত ইকরামের খালাত বোন লাভলি আক্তারের ছেলে। সাদী ক্ষোভ থেকে মামা ইকরামকে হত্যায় খুনিদের সহায়তা করেছিলেন বলে স্বীকারোক্তিতে বলেছেন।

হত্যা পরিকল্পনা ও হত্যার বিবরণে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইকরাম হোসেন সরাইল উপজেলার বারজীবিপাড়ায় তার খালাত বোন লাভলি আক্তারের বাড়ি থেকে লেখাপড়া করতেন। লাভলির মেয়েও ইকরামের সঙ্গে কলেজে পড়েন। ওই ছাত্রীকে প্রতিবেশী রবিউল্লার ছেলে মো. শিমুল প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত। ইকরাম এর প্রতিবাদ করেন এবং গত বছরের ১৩ অক্টোবর সরাইলের ইউএনও উম্মে ইসরাত বখাটে শিমুলকে আট মাসের কারাদণ্ড দেন। তখন থেকেই ইকরামের প্রতি শিমুলের ক্ষোভ তৈরি হয়।

গত ঈদুল ফিরের আগে সাজা ভোগ করে কারামুক্ত হন শিমুল।

এদিকে, কোনো এক সময় ইকরাম তার ভাগ্নে সাদীকে মারধর করেছিলেন বলে ইকরামের উপর তার ক্ষোভ ছিল বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

সাদী প্রায়ই ইকরামের সঙ্গে ঘুমাত। তাই হত্যার কাজে সাদীকে সঙ্গে রাখে শিমুল। মাস দুয়েক আগে তারা দুইজন স্থানীয় একটি বিলে দেখা করে ইকরামকে হত্যার পরিকল্পনা করেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

ঘটনার বিবরণে এসপি আনিসুর রহমান বলেন, গত ১০ অগাস্ট ভোররাত ৩টার দিকে সাদী ঘরের দরজা খুলে দিলে শিমুল ও তার ভাই সোহাগ দা, ছুরি এবং বস্তাসহ ঘরে ঢোকেন। সাদী তার ঘুমন্ত মামা ইকরামের পা চেপে ধরেন আর শিমুল ও সোহাগ দা, ছুরি এবং ঘরে থাকা বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন।

পরবর্তীতে মরদেহ গুম করার জন্য প্লাস্টিকের বস্তায় বেধে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়।

“তবে ভোরের আলো ফোটার কারণে মরদেহ গুম করতে না পেরে ঘরেই লুকিয়ে রাখেন। সকালে ইকরামকে ঘুম থেকে জাগানোর জন্য লাভলি ঘরের দরজা খুলে দেখেন মেঝেতে বস্তাবন্দি দুই পা বের হয়ে আছে।

এ সময় লাভলি চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে আসেন।  

এসপি আরও জানান, এ ঘটনায় নিহত ইকরাকের বাবা শহিদ মিয়া বাদী হয়ে রোববার (১১ অগাস্ট) ১১ জনকে আসামি করে সরাইল থানায় মামলা দায়ের করেন, যাদের মধ্যে গ্রেপ্তার সাদী, নাজিম উদ্দিন ও নাজমাও রয়েছেন।