বিজিবির ঈদের দিনও ‘অন্য দিনের মত’

চিকিৎসক, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস বা অন্য অনেক পেশার মত বিজিবি সদস্যরাও ঈদের দিন দায়িত্ব পালন করেন। তাদের কাছে ঈদের দিনও অন্য দিনের মত। তবু তারা ঈদ করেন।

আসাদুজ্জামান আসাদ, বেনাপোল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 August 2019, 11:18 AM
Updated : 12 August 2019, 11:45 AM

বিজিবি সদস্যরা কেমন ঈদ করেন, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে সেই গল্প শুনিয়েছেন খুলনার বিজিবি ২১ ব্যাটালিয়ানের কয়েকজন সদস্য।

যশোরের শার্শা উপজেলায় রুদ্রপুর সীমান্ত ফাঁড়িতে ঈদের দিন বেলা সাড়ে ১১টায় দায়িত্ব পালন করছিলেন বিজিবির নায়েক সুবেদার মোসাদ্দেক হোসেন।

মোসাদ্দেক বলেন, “সকাল থেকেই ডিউটি শুরু হয়। তাই ঈদের নামাজ সবাই ভাগাভাগি করে পড়েছি। পরিবার নিয়ে ঈদ করার ইচ্ছা থাকলেও দেশরক্ষার দায়িত্বে থাকা আমাদের তা হয়ে ওঠে না।

“আমরা দেশের পাহারাদার। সীমান্ত সুরক্ষার গুরুদায়িত্ব আমাদের কাঁধে। আগে দেশরক্ষা, পরে আত্মরক্ষা। দেশ বাঁচলে পরিবার বাঁচবে। এই ব্রত নিয়েই চাকরিতে ঢোকা। তাই সবাই বছরে এক ঈদে ছুটি পান। আরেক ঈদের দায়িত্ব পালন করতে হয়।”

শার্শা উপজেলার উত্তরে বাংলাদেশ ও ভারতের মাঝখানে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া রয়েছে। অনেকখানি এলাকাজুড়ে আছে ইছামতী নদী। এই নদীই দুই দেশকে ভাগ করে রেখেছে।

বিজিবির পুটখালী কোম্পানির ক্যাম্প কমান্ডার সুবেদার আবুল হোসেন বলেন, সীমান্তের বেশ কিছু পয়েন্ট দিয়ে চোরাকারবারিরা মাদক, গরুসহ বিভিন্ন ভারতীয় মাল পাচারের জন্য সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। ফলে বিজিবিকে সারাক্ষণ তাদের ওপর নজর রাখতে হয়।

“মন চাইলেও পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার সুযোগ হয় না। তাই কর্মক্ষেত্রেই নিজেদের মধ্যে সাধ্যমত আনন্দ করি। দেশরক্ষা পবিত্র দায়িত্ব বলে আমরা মনে করি। এটাই আমাদের ঈদ।”

৩৮ বছর ধরে চাকরি করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “এর মধ্যে অন্তত ২০টি ঈদ পরিবারের সাথে করতে পারিনি। সহকর্মীদের সঙ্গেই ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিই। এটাই ভালো লাগে।”

একই কথা বললেন বিজিবির পুটখালী মসজিদবাড়ি পোস্টে দায়িত্বে থাকা জওয়ান আব্দুল মোমিন।

“দেশরক্ষা, সীমান্তের মানুষ ও দেশের সব মানুষকে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেওয়াতেই আমাদের বড় আনন্দ। দেশের প্রতিটি মানুষ আমাদের আপনজন। প্রতিটি পরিবারই আমাদের পরিবার।”