আরবের সঙ্গে মিল রেখে বিভিন্ন স্থানে ঈদ

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে প্রতিবারের মতো এবারও দেশের কয়েকটি স্থানে আগাম ঈদ পালিত হচ্ছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 August 2019, 02:14 PM
Updated : 11 August 2019, 04:45 PM

এরমধ্যে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, চাঁদপুর, দিনাজপুর, শরীয়তপুর ও সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকা রয়েছে।

এসব এলাকার লোকজন সৌদি আরবের সঙ্গে একই দিন রোজা শুরু করেন; একই দিন ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উদযাপন করেন।

সেই হিসাবে আমাদের দেশে যেদিন রোজা শুরু কিংবা ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা হয় তার একদিন আগে তারা উৎসবগুলো পালন করেন।

বাংলাদেশে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে সোমবার।   

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের চট্টগাম অফিস ও জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ:

চট্টগ্রাম

রোববার চট্টগ্রামের চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, বাঁশাখালী, আনোয়ারা, কক্সবাজারের চকরিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, বান্দরবানের লামা, আলিকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাসিন্দারা ঈদ পালন করছেন।

সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের মির্জাখীল দরবার শরীফের অনুসারী বিভিন্ন এলাকার লোকজন ঈদসহ মুসলমানদের বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে থাকেন একদিন আগে।

চন্দনাইশের সাতবাড়িয়ার বাসিন্দা ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের চিকিৎসক সরোয়ার হোসেন চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, মীর্জাখীল দরবার শরীফে সকাল ১০টায় ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা দরবারের অনুসারী কয়েক হাজার মানুষ নামাজ আদায় করেছেন।

মীর্জাখীল দরবার শরীফের বর্তমান সাজ্জাদানশীল হযরত শাহ জাহাঁগীর তাজুল আরেফীনের মৌলানা মোহাম্মদ আরেফুল হাই-এর উপস্থিতিতে ঈদ জামাতে ইমামতি করেন হযরত শাহ জাহাঁগীর ইমামুল আরেফীন ড. মাওলানা মো. মকছুদুর রহমান।

ঈদের নামাজ আদায়কারীরা নামজ শেষে পরস্পরের সঙ্গে কোলাকুলি করেন। পরে বাড়ি গিয়ে পশু কোরবানি দেন।

সাতকানিয়ার মির্জাখীল, চরতী, সুইপুরা, গাটিয়া ডেঙ্গা, চন্দনাইশের হারলা, কাঞ্চননগর, বাদামতল, পশ্চিম এলাহাবাদ, বাইনজুরি, কেশুয়া, কানাইমাদারী, সাতবাড়িয়া ও দোহাজারিতে ঈদ পালিত হচ্ছে।

বাঁশখালীর চাম্বল, কালিপুর, শেখের খীল, ভাদালিয়া, হাছনদণ্ডী, চর বরমা, আলী নগর, পটিয়ার বাহুলী, পারিগ্রাম মোল্লা পাড়া, আলমদার পাড়া, হাইদগাঁও, আনোয়ারার বরুমছড়া, বরকল, তৈলার দ্বীপসহ আরও কিছু গ্রামে আগাম ঈদ উদযাপিত হচ্ছে।

এছাড়া কক্সবাজারে চকরিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়া উপজেলার কিছু এলাকায় ঈদ উদযাপিত হচ্ছে।

বান্দরবানের লামা, আলিকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বেশকিছু বাসিন্দাও আগাম ঈদ পালন করছেন।

চাঁদপুর

চাঁদপুরের পাঁচ উপজেলায় উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে।

জেলার হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, মতলব উত্তর, শাহরাস্তি ও কচুয়া উপজেলার ৪০টি গ্রামের অন্তত অর্ধলক্ষ মুসলমান রোবাবার ঈদুল আজহা উদযাপন করছেন।

চাঁদপুর

সকাল ৯টায় হাজীগঞ্জের সাদ্রা গ্রামের সাদ্রা হামিদিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে ঈদুল আজহার জামাতের ইমামতি করেন মাওলানা মো. আরিফুল্লাহ।

মুন্সীরহাট জামে মসজিদ, টোরা মুন্সীরহাট ঈদগাহ ময়দানসহ বিভিন্ন স্থানে ঈদের জামাত হয়েছে সকাল ৯টায় ও ১০টায়।

এছাড়া ফরিদগঞ্জ উপজেলার কামতা, বদরপুর, বাচপাড়, মূলপাড়া, কাইতয়াড়া, সুরঙ্গচাল, বাসারা, লক্ষ্মীপুরে ঈদের জামাতের পর ঈদকে ঘিরে বিভিন্ন এলাকায় মেলাও বসেছে।

দিনাজপুর

দিনাজপুরে সদর, চিরিরবন্দর কাহারোল ও বীরগঞ্জ উপজেলায় কয়েকটি এলাকায় রোববার ঈদুল আজহা উদযাপন করছেন স্থানীয়রা।

দিনাজপুর

দিনাজপুর শহরের বাসুনিয়াপট্টি এলাকায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত ঈদের জামাতে নারী-পুরুষসহ প্রায় দুইশ জন অংশ নেন। এখানে ঈমামতি করেন মাওলানা সাইফুল ইসলাম।

মাওলানা সাইফুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তাদের অনুসারীরা জেলার সদর, চিরিরবন্দর, কাহারোল ও বীরগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি স্থানে আজ ঈদের নামাজ করেছেন।

সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার অন্তত আটটি গ্রামে রোববার ঈদুল আজহা পালিত হচ্ছে। সদর উপজেলার বাউখোলায় গ্রামগুলোর শতাধিক মানুষ ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।

রোববার সকাল সাড়ে ৭টায় জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। নামাজে ইমামতি করেন মাওলানা মহব্বত আলী।

সদর উপজেলার বাউখোলা, সাতানি, ভাদড়া, তালা উপজেলার ইসলামকাটি, কালিগঞ্জের নলতা, খুলনার ডুমুরিয়া ও পাইকগাছাসহ আটটি গ্রামের মানুষ ঈদ উদযাপন করছেন।

শরীয়তপুর

সুরেশ্বর পীরের সকল ভক্ত ও তাদের মুরিদানেরা রোববার ঈদুল আজহা পালন করছেন।

নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর, চন্ডিপুর, ইছাপাশা, থিরাপাড়া, ঘড়িষার, কদমতলী, নিথীরা, মানাখানা, নশাসন, ভুমখারা, ভোজেশ্বর, জাজিরা উপজেলার কালাইখার কান্দি, মাদবর কান্দি, সদর উপজেলার বাঘিয়া, কোটাপাড়া, বালাখানা, প্রেমতলা, ডোমসার, শৌলপাড়া, ভেদরগঞ্জ উপজেলার লাকার্তা, পাপরাইল ও চরাঞ্চলের ১০টি গ্রামসহ প্রায় ৩০টি গ্রামের অন্তত এক হাজার পরিবারে এ দিনে ঈদ উৎসব পালন করছে।

ছবি: দিনাজপুর

১০ হাজারেরও বেশি নারী-পুরুষ রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় সুরেশ্বর দরবার শরীফে ঈদের জামাতে উপস্থিত হন।

নামাজ শেষে সেমাই পোলাও খেয়ে তারা আনন্দ করেন।

ঈদ জামাতে ঈমামতি করেন সুরেশ্বর পীরের বর্তমান গদিনীশীন মুত্তালী সৈয়দ বেলাল নুরী।

সুরেশ্বর দরবার শরীফের বর্তমান গদিনীশীন মুত্তালী সৈয়দ কামাল নুরী বলেন, “দীর্ঘদিন যাবৎ আমরা সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে নামাজ শেষে ঈদের উৎসব পালন করে আসছি। এর ধারাবাহিকতায় শরীয়তপুর জেলার ৩০টি গ্রামের অন্তত ১০ হাজার মুরিদান আমাদের সাথে আজ ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।”

মাদারীপুর, মৌলভীবাজার, লক্ষ্মীপুর জেলায়ও বেশ কয়েকটি স্থানে আগাম ঈদ পালিত হয়।