শনিবার বিকালে উপজেলার কাইচাইল ইউনিয়নের কাইচাইল মধ্যপাড়া দারুল উলুম মাদ্রাসার কাছে এ সংঘর্ষ হয় বলে নগরকান্দা থানার ওসি মিজানুর রহমান জানিয়েছেন।
এ ঘটনায় কয়েক ঘণ্টার মধে্যে পুলিশ অস্ত্রসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
নিহতরা হলেন মৃত আবু বক্করের ছেলের রওশন আলী মিয়া (৫২) ও তার ভাতিজা রায়হান মিয়ার ছেলে তুহিন মিয়া (২৫)।
আহতদের মধ্যে রায়হান উদ্দিন মিয়া (৬৫), আনিস মীর (২০), গোলাম রসুল বিপ্লব (৩০), গোলাম মওলা (৩০) ও আবুল কালামকে (৩৫) ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং আনিস মিয়া (২৪), ফারুক মাতুব্বর (৪০), চুন্নু মিয়া (৪৮), সুমন মিয়া (২৮) ও বাবলু মিয়াকে নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ওই ইউনিয়নে অধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন ওরফে ঠান্ডুর সঙ্গে তার চাচাত ভাই যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হানিফ মিয়া ওরফে হৃদয়ের বিরোধ চলে আসছিল।
এ বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রায়ই ওই দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি চলে আসছিল। এর জের ধরে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে এলাকাবাসী জানায়, বলেন ওসি।
“ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন।”
পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ওসি।
এ ঘটনায় দুই পক্ষ পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন বলেন, “কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা হানিফ মিয়া ও তার ভাই হাসান মিয়া একটি মাইক্রোবাসে করে এলাকায় আসেন।
“তারা ওই মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে কোরবানীর আয়োজন নিয়ে পরামর্শরত তার সমর্থকদের উপর গাড়ির মধ্যে থেকেই নির্বিচারে গুলি করে পালিয়ে যায়। হানিফ মিয়া নিজে শটগান থেকে গুলি করেছেন।”
এ ঘটনায় তার দুই সমর্থক নিহত এবং আটজন আহত হন বলে জানান কবির হোসেন।
“মাদ্রাসা এলাকায় এলে চেয়ারম্যানের চাচা রওশন, রুস্তম, রায়হান, মাওলা ও বিপ্লবসহ ১০/১২ জন লোক আমাদের বাধা দেয়। তারা গাড়িতে হামলা করে গাড়িটি ভাংচুর করে এবং তাদের উপর কাঠ, লাঠি নিয়ে হামলা করে।”
হাসান আরও বলেন, তারাও কাঠ-লাঠি কেড়ে নিয়ে পাল্টা হামলা করেন। এ সময় গুলির ঘটনাও ঘটে।
তিনি আরও বলেন, এ সংঘর্ষে তিনি ও তার ভাই হানিফসহ তিনজন আহত হয়েছেন। তারা ফরিদপুর মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি হবেন।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলীমুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় রাত ১০টার দিকে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা থেকে একটি শটগানসহ তিনজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।