এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীদের পক্ষে স্থানীয় নীলগঞ্জ সাহাপাড়ার বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ সড়কের বাসিন্দা বিদ্যুৎ কুমার দে পৌরসভা, পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন।
পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ওই কারখানা স্থানান্তরের পরামর্শ দেওয়া হলেও তা কার্যকর হয়নি। উল্টো আবেদনকারী বিদ্যুৎ কুমার দেকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এই কারখানা দুইটির মালিক প্রয়াত দেবু অধিকারীর দুই ছেলে চিত্তরঞ্জন অধিকারী ও সুনীল অধিকারী। যশোরের সুপরিচিত ও প্রাচীন দেবু সুইটসের দুটি দোকানের স্বত্বাধিকারী তারা। শহরের নীলগঞ্জ সাহাপাড়ার বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ সড়কে নিজ নিজ বাড়ির সঙ্গে রয়েছে তাদের দুই কারখানা।
বিদ্যুৎ কুমারের অভিযোগ, কারখানার ধোঁয়া ও বর্জ্যের দুর্গন্ধে অতীষ্ঠ আশপাশের বাড়ির মানুষ। মিষ্টির ভারী গাদে ড্রেনগুলোর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে পরিবেশের ক্ষতি করছে। এছাড়া মহল্লার অপ্রশস্ত পাঁচ ফুট রাস্তা দিয়ে বড়ো আকারের জ্বালানি কাঠবাহী ভ্যানের যাতায়াতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাস্তার পাশের বাড়ির দেওয়াল।
এই বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের চিঠির কোনো নির্দেশনা মানা হয়নি।
এ ব্যাপারে মহল্লার বাসিন্দা লিয়াকত হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সুনীলের কারখানা থেকে গন্ধ তেমন আসে না। প্রকট গন্ধ আসে তার বড়ো ভাই চিত্তরঞ্জন অধিকারীর কারখানা থেকে।
একই কথা বলেছেন স্থানীয় একটি ওয়েল্ডিং কারখানার মালিক হাশেম আলী। যখন অনেক গরম পড়ে তখন এ মিষ্টি কারখানার দুর্গন্ধে এলাকার মানুষ অতীষ্ঠ হয়ে ওঠেন বলে তিনি জানান।
নামে প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই মহল্লার এক মুদি দোকানি বলেন, জনবহুল এলাকার মধ্যে কারখানা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে এলাকার অপরাধীদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখেন সুনীল ও চিত্তরঞ্জনরা। এর ফলে সরাসরি তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলা যায় না।
বিদ্যুৎ কুমার দে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, যশোরে পরিবেশ অদিদপ্তরে তার দেওয়া আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৩০ অক্টোবর সুনীল অধিকারীকে একটি চিঠি দেয় অধিদপ্তর।
এ বিষয়ে প্রতিকার চাওয়ায় প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে বিদ্যুৎ কুমার দে যশোর জেলা প্রশাসন, পৌরসভা ও পরিবেশ অধিদপ্তরে দেওয়া আবেদনে উল্লেখ করেছেন।
এ বিষয়ে একটি কারখানার মালিক সুনীল অধিকারী বলেন, তার বড়ো ভাইয়ের (চিত্তরঞ্জনের) কারখানা নিয়ে এলাকাবাসীর অভিযোগ থাকলেও তার কারখানা নিয়ে একমাত্র অভিযোগ প্রতিবেশী বিদ্যুৎ কুমার দে-এর।
তিনি যাবতীয় নিয়মকানুন মেনে কারখানা চালাচ্ছেন বলে দাবি করছেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্দেশনা বিষয়ে জানতে চায়লে সুনীল বলেন, “আপনারাই দেখেন আমার কারখানার ভিতরে ও বাইরে কোথাও কোনো দুর্গন্ধ নেই। প্রতিদিন কাজ শেষ হলে আমরা সাবমারসিবল পাম্পের সাহায্যে পানি দিয়ে এমনভাবে পরিষ্কার করি যাতে ড্রেনগুলোতে গাদ জমা হতে না পারে।”
যশোর পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এলাকাবাসী অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া আমরা খোঁজ খবর নেব।”
পরিবেশ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক শেখ মোহাম্মদ নাজমুল হুদা বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে খোঁজখবর নিয়ে কারখানাটি স্থানান্তরের কথা বলা হয়েছে।
তাদের নির্দেশনা না মানার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, তারা কারখানা বন্ধ করতে পারেন না। তাই বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়ছে।