হরগঙ্গা কলেজের ৩টি ভবন হেলে পড়েছে, বন্ধ ঘোষণা

মুন্সীগঞ্জের সরকারি হরগঙ্গা কলেজের তিনটি ভবন দেবে গিয়ে হেলে পড়েছে।

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 August 2019, 05:03 PM
Updated : 5 August 2019, 05:03 PM

সোমবার বিকালে কলেজটির মূল ভবন, পুরতন মসজিদ ও রোভার ভবন হেলে পড়ে এবং কলেজের পুকুর পাড় সংলগ্ন রাস্তাটি ভেঙ্গে যায়।

এ কারণে কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার কলেজের সকল শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে।

কলেজ কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, পার্শ্ববর্তী মুন্সীগঞ্জ জেলা স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজে ব্যবহৃত ড্রেজারের পানির তোড়ে এই ভবনগুলো হেলে পড়েছে।

এদিকে, ঘটনার পরপরই জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

ঘটনার পরপই সেখানে ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম উদ্ধার কাজ চালায়।

কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ রাসেল কবির বলেন, পার্শ্ববর্তী মুন্সীগঞ্জ জেলা স্টেডিয়ামে সংস্কার কাজে ব্যবহৃত ড্রেজারের পানি মূল ভবনের পতিত মাঠে জমছিল। হরগঙ্গা কলেজের পুকুরের পাশে রাস্তার গাইড ওয়াল নির্মাণের জন্য পুকুরটি খালি করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের ড্রেজারের পানি নিষ্কাশনের কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তাই ড্রজারের পানি মূল ভবনের পতিত মাঠ ভরে হঠাৎ পুকুরে চলে আসে। ক্ষতিগ্রস্ত তিনটি ভবনেই ছিল পুকুর পাড়ে। পুকুরটি যেহেতু খালি ছিল তাই হঠাৎ সজোরে পুকুরটি ভরে ভবনগুলোর নিচের মাটি সরে এগুলো দেবে হেলে পড়ে।

“ভাগ্য ভালো এ সময় সেখানে কোনো শিক্ষার্থী ছিল না। কলেজ ছুটি হয়ে গিয়েছিল।”

তিনি জানান, দ্বিতল মূল ভবনে একাদশ মানবিক শাখার তিনটি শ্রেণিকক্ষ, অনার্সের উদ্ভিদ বিজ্ঞান, প্রাণিবিজ্ঞান, আইসিটি, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের ১ম বর্ষের শ্রেণিকক্ষ এবং বিশেষায়িত কম্পিউটার ল্যাব ও তিনটি ল্যাব রয়েছে।

কলেজ চলাকালে এ দুর্ঘটনা ঘটলে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেত পারত। ইতিমধ্যে মুন্সীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে ভবনগুলোকে সোমবার বিকালে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছে বলে তিনি জানান।

কলেজের উপাধ্যক্ষ নাসিমা আহমেদ বলেন, কলেজটির পাশেই জেলা স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ চলছিল। স্টেডিয়াম থেকে পানি পুরাতন ভবনটির পাশে জমা হচ্ছিল দীর্ঘদিন ধরেই। এক পর্যায়ে মজুদ এসব পানির চাপে ভবনের তলদেশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

“আজ পুরাতন ভবনটিতে ফাটল ধরে হেলে পড়েছে এবং পাশের শ্রেণিকক্ষ ও রোভার কক্ষটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মঙ্গলবার এ বিষয়ে একটি জরুরি সভা ডাকা হয়েছে।”

মুন্সীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার শফিউল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে পুরাতন ভবনটিতে তলদেশে খাদের মতো আছে। প্রচণ্ড গতিতে পানি প্রবেশের ফলে চাপে ভবনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য শাহীন মোহাম্মদ আমানুল্লাহ বলেছেন, হরগঙ্গা কলেজের মূল ভবনটি অনেক পুরানো। সেখানে কোনো পাইলিং ছিল না। এছাড়া পুকুরটির উত্তর কোণে কলেজটির নতুন হোস্টেল নির্মাণের জন্য হাইড্রোলিক পাইলিং চলছে। আর দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে ছিল মূল ভবনটি।

“পাইলিং, বর্ষার পানি আর ড্রেজারের পানির একত্রিত চাপে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।”

এছাড়া বর্ষা মৌসুমে পুকুরের পানি খালি করে গাইড ওয়াল নির্মাণ করছিল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তার। এটাও একটা কারণ হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী শাহজাহান বাদশা বলেন, পুকুরটির পানি খালি করা হয়েছিল গাইড ওয়াল নির্মাণ করার জন্য। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।