বন্যায় গাইবান্ধায় ১১ বিদ্যালয় বিলীন

এবার বন্যায় গাইবান্ধায় নদীভাঙনে ১১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বিলীন হয়ে গেছে; ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও ২৭৪টি।

গাইবান্ধা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 August 2019, 01:46 PM
Updated : 3 August 2019, 01:46 PM

বিলীন হওয়া বিদ্যালয়গুলোর তালিকা দিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসেন আলী।

তিনি বলেন, নদীভাঙনে সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে ফুলছড়ি উপজেলার হাড়ডাঙ্গ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধলিপাটাধোয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কৈতকিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জামিরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আঙ্গারিদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সদর উপজেলার চিথুলিয়ারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চিথুলিয়াদিগর নতুনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাজেচিথুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মৌলভীরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার উজান বুড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চরপূর্ব লালচামার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, তাছাড়া ২৭৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চেয়ার-টেবিল, বেঞ্চ, আলমারিসহ নানা ধরনের আসবাবপত্র পানিতে ডুবে ক্ষতি হয়েছে। মোট ক্ষতির পরিমাণ তিন কোটি ৩৭ লাখ টাকার মত।

চিথুলিয়ারচর গ্রামের অভিভাবক আমিনুল ইসলাম বলেন, তাদের বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। কবে শুরু হবে তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছে না। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে আছে।

চিথুলিয়ারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইউনুছ আলী বলেন, বেঞ্চ, চেয়ার-টেবিল, ঘড়ি, আলমারি, শোকেস, দুটি ল্যাপটপসহ বিদ্যালয়টি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে সাত লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখন বিদ্যালয়টি স্থানান্তর করার জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। নতুন কোনো জায়গা পাওয়া গেলে সেখানে স্থান্তরের পর পাঠদান চালু করা হবে।

এদিকে ভাঙনের মুখে কেবলাগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুটি টিনশেড ঘর গত বৃহস্পতিবার নিলামে মাত্র ৩৪ হাজার টাকায় বিক্রি করেছে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা কমিটি।

বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. সামছুল হক বলেন, “নদীভাঙনের মুখে বিদ্যালয়ের স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার কোনো সুযোগ না থাকায় দ্রুততার সঙ্গে নিলামে দেওয়া হয়।”

কামারজানি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুন্নবী সরকার বলেন, সাম্প্রতিক বন্যার সময় থেকে অব্যাহত ভাঙনে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দুটি হুমকির মুখে পড়ে। বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হলেও তারা কোনো খোঁজখবর নেয়নি।

কুন্দেরপাড়া গণউন্নয়ন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান সরকার বলেন, “অব্যাহত নদী ভাঙনে হাইস্কুল মাঠ বিলীন হয়েছে। বিদ্যালয়ের স্থাপনা এখনও সরিয়ে অন্যত্রে নিতে পারিনি। অন্য কোথাও সরিয়ে নিয়ে স্থাপন করা হবে, সে রকম কোনো জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না।”

শিক্ষা কর্মকর্তা হোসেন আলী বলেন, “বিলীন বিদ্যালয়গুলোর আসবাবপত্র ও ভবনের জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু হবে। তার আগে এসব বিদ্যালয়ে পাঠদানের বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।”  

ভাঙনরোধে সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় এ মুহূর্তে কোনো কর্মসূচি নেই বলে জানিয়েছেন গাইবান্ধা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান।