ফেনীতে মামলার বাদীকে কুপিয়ে হত্যা

ফেনীতে মামলার বাদী এক প্রবাসীকে জমির বিরোধে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে আসামিদের বিরুদ্ধে। এছাড়া ১২ ভরি সোনার গয়না ও দুই লাখ টাকা লুটের অভিযোগ আছে।

ফেনী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 August 2019, 01:15 PM
Updated : 2 August 2019, 01:15 PM

জেলার সোনাগাজী থানার ওসি মাঈন উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় আটজনের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি পাঁচ-ছয়জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলার পর পুলিশ এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে।

নিহত জামাল উদ্দিন (৫৫) সোনাগাজী উপজেলার ভাদাদিয়া গ্রামের আলতাফ আলীর ছেলে।

একই আসামিরা ১০ বছর আগে নিহত বাদীর স্ত্রীকে হত্যা করে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

জামালের পুত্রবধূ জাকিয়া আক্তার জানান, জামাল উদ্দিন সৌদি আরব থেকে সম্প্রতি দেশ এসেছেন। তার সঙ্গে একই বাড়ির শাহ আলমদের দীর্ঘদিন ধরে জমির বিরোধ চলছে। সম্পত্তির এক মামলায় সম্প্রতি আদালতের রায় আসে জামালের পক্ষে। আদালতের রায় পেয়ে ২৪ জুলাই জামাল নির্মাণ শ্রমিকদের নিয়ে বাড়ির সীমানা প্রাচীর নির্মাণ শুরু করেন।

জাকিয়ার অভিযোগ, “প্রাচীর নির্মাণ শুরু করলে শাহ আলমের নেতৃত্বে আট-দশজন লোক জামাল ও তার তিনজন নির্মাণশ্রমিককে পিটিয়ে আহত করে। এ ঘটনায় গত ২৪ জুলাই জামাল উদ্দিন সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন।

“আসামিরা হলেন শাহ আলম, রিপন, হৃদয়, আলা উদ্দিন, জাহিদ, আমেনা খাতুন, আজিমা খাতুন ও অজ্ঞাত পাঁচ-ছয়জন। ওই মামলায় পুলিশ শাহ আলমকে গ্রেপ্তার করে। আসামিরা ২৮ জুলাই জামিনে বের হয়ে এসে আমাদের প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকেন।”

এরপর বুধবার মধ্যরাতে ওই আসামিরা হামলা চালায় বলে জাকিয়ার অভিযোগ।

“শাহ আলমের ছেলে রিয়াদ, হৃদয়, আলা উদ্দিন, জাহিদ, দাউদুল ইসলাম ও জামসেদ আলসহ ১৫-২০ জন বসতঘরে ভাঙচুর চালায়। তারা ঘরে ঢুকে জামালকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে, গলা চেপে ধরে মুখে চেতনানাশক স্প্রে করে। এতে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। তারা আমার ঘরে ঢুকে পিটিয়ে আহত করে। আলমারি ভেঙে ১২ ভরি সোনার গয়না ও তোশকের নিচে থেকে দুই লাখ টাকা লুটে নেয়। তারা বেসিন, দরজা, জানালা ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।”

জাকিয়ার স্বামীসহ জামালের দুই ছেলে প্রতিবন্ধী বলে জানান জাকিয়া।

জাকিয়া বলেন, “বৃহস্পতিবার ভোরে জামাল উদ্দিনকে প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে ফেনী সদর হাসাপাতালে এবং সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে তিনি মারা যান।”

জাকিয়া আক্তার সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

তিনি বলেন, “২০০৯ সালে গভীর রাতে ঘরে ঢুকে এসব আসামিদের কয়েকজন ও তাদের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা আমার শাশুড়ি আয়েশা আক্তারকে হত্যা করে। সে মামলাটির আদালতে বিচার চলছে।”

এ বিষয়ে ওসি মাঈন উদ্দিন বলেন, জামাল হত্যার মামলায় এজাহারভুক্ত এক নারী আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।