ছিটমহল বিনিময়ের চার বছরে আনন্দ কর্মসূচি

ছিটমহল বিনিময়ের চার বছরে দিনটিকে পঞ্চগড়ে নানা আয়োজনে স্মরণ করেছে স্থানীয়রা।

সাইফুল আলম বাবু পঞ্চগড় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 July 2019, 05:29 PM
Updated : 31 July 2019, 05:29 PM

বুধবার দুপুরে সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের গাড়াতি এলাকা থেকে বিলুপ্ত ছিটমহলের প্রায় এক হাজার বাসিন্দা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ের শেরেবাংলা পার্কে একত্রিত হন। সেখান থেকে তারা আনন্দ শোভাযাত্রা নিয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান।

পরে তারা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর বিভিন্ন দাবি সংবলিত স্মারকলিপি দেন।

এরপর গাড়াতি এলাকার মফিজার রহমান ডিগ্রী কলেজ মাঠে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

এছাড়া মধ্যরাতে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও মোমবাতি প্রজ্বালনের কমসূচিও নেওয়া হয়।

২০১৫ সালের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে স্থল সীমান্ত চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারত ছিটমহলগুলো বিনিময় করা হয়।

শোভাযাত্রায় সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, ছিটমহল আন্দোলনের নেতা মফিজার রহমানসহ বিলুপ্ত ছিটমহলের সাবেক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। মফিজার রহমান ডিগ্রী কলেজ মাঠে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম।

বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি পঞ্চগড় ও নীলফামারী জেলার সাবেক সভাপতি মফিজার রহমান বলেন, স্মারকলিপিতে শিক্ষক নিবন্ধনের শর্ত শিথিল করে এসব এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভুক্ত করা এবং ছিটমহল বিনিময়ের দিনটিকে ‘ছিটমহল স্বাধীনতা দিবস’ কিংবা ‘ছিটমহল বিনিময় দিবস’ হিসেবে জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি দানের দাবি জানানো হয়েছে।

“বিনিময়ের চার বছরে বিলুপ্ত ছিটমহল এলাকাগুলোতে ব্যাপক উন্নয়নের কারণে এদুটি ছাড়া আমাদের সেরকম কোনো দাবি আর অপূর্ণ নেই।”

বিলুপ্ত পুটিমারি ছিটমহলের সাবেক নেতা তছলিম উদ্দীন বলেন, “আজকের দিনটি আমাদের কাছে স্বাধীনতা দিবস বা মুক্তি পাওয়ার দিবসের মতো। দীর্ঘ সময়ের পরাধীনতা থেকে আমরা এদিন থেকে মুক্তির স্বাদ পেয়েছি। নাগরিক সব অধিকার এখন পাচ্ছি। এজন্য এ সরকারের অবদান আমাদের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।”

বিলুপ্ত গারাতি ছিটমহলের বাটুভিটা গ্রামের আব্দুল শাহিদ (৭৮) বলেন, “এখন অনেক ভালো আছি। আমার মতো অনেকেই বয়স্ক ভাতা পাচ্ছে, অনেকেই বিধবা ভাতা পাচ্ছে। অনাহারে অর্ধাহারে থাকার দিন শেষ হয়েছে।”

পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, জেলার ৩৬টি ছিটমহলের প্রায় ২০ হাজার মানুষের ঘরে ঘরে গত চার বছরে বিনামুল্যে বিদ্যুৎ সংযোগ, ২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন, তিনটি কমিউনিটি ক্লিনিক, ভূমিহীন পরিবারের জন্য তিনটি গুচ্ছগ্রাম ও ৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০২ কিলোমিটার পাকা সড়ক নির্মাণসহ ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে। বর্তমানেও বেশকিছু উন্নয়ন কাজ চলমান আছে।

স্থানীয়দের দাবি সংবলিত স্মারকলিপি নিয়ম অনুযায়ী যথাযথ স্থানে পাঠানো হবে বলে তিনি জানান।