সরেজমিনে জানা যায়, ধুনট উপজেলার ভাঙাবাড়ি ইউনিয়নের একটি গ্রাম রাধানগর। ওই গ্রামের উত্তরে ছিল সারিয়াকান্দি উপজেলার আওলাকান্দি এবং দক্ষিণে ধুনটের আরেকটি গ্রাম বৈশাখী।
স্থানীয়রা জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধারা ট্রেনিং নেওয়ার জন্য ভারতে যাওয়ার সময় ওই তিনটি গ্রামে অবস্থান করত। গ্রামের লোকজন ওই মুক্তিকামী যুবকদের গোপনে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করত। তারপর নৌকাযোগে কুড়িগ্রামের মাইনকার চর হয়ে ভারতে যেত তারা। আবার ট্রেনিং নিয়ে ফিরে এসে বিভিন্ন জায়গায় মুক্তিবাহিনীরা অপারেশনে চলে যেত।
রাধানগর গ্রামে রিফাস মন্ডলের জমি ছিল শতাধিক বিঘা।
তার ছেলে মোহাম্মদ আলী বলেন, ১৯৮২ সালে রাধানগর গ্রামটি যমুনার ভাঙনে বিলীন হয়ে যায়। ২৫ বছর পর আবারও চরটি জেগে ওঠে। প্রায় দুই হাজার বিঘা জমি নিয়ে চরটি জেগে ওঠার পর আবার বসতি গড়ে ওঠে। চরটি আগের রাধানগর গ্রামের মতই সুজলা সুফলা হয়ে ওঠে।
এবার বন্যায় সমস্ত চর আবার ভেঙে গেছে। অনেকেই নিজের বাড়িঘর ছেড়ে শূন্য হাতে কোনোরকমে সন্তানসন্ততি নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে এবং আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।
বৈশাখী গ্রামের সামছুদ্দিন ও গোলা রহমান বলেন, প্রায় ২০ বছর আগে জেগে ওঠা বৈশাখী চরে আবারও বসতি শুরু হয়। সেখানে প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় গড়ে ওঠে। এবার সেই বৈশাখী চরও ভাঙনের কবলে পড়েছে।
আওলাকান্দির আজম বলেন, জেগে ওঠা আওলাকান্দি চরও ভাঙনের মুখে পড়েছে। রাধানগরের অনেকেই আশ্রয় নিয়েছে বৈশাখী চরসহ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে।
খবর সংগ্রহ করতে বৈশাখী চরে গেলে সেখানে দেখা হয় বগুড়া-৫ আসনের (ধুনট-শেরপুর) সাংসদ হাবিবুর রহমান ও ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে।
তারা জানান, রাধানগর গ্রামে ত্রাণ দিতে এসেছিলেন। কিন্তু গ্রামটি যমুনার গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে। অনেকেই আশ্রয় নিয়েছে বিভিন্ন জায়গাসহ বৈশাখী গ্রামে। তাই বৈশাখী গ্রামসহ আশ্রিতদের ত্রাণ সামগ্রী দেওয়ার জন্য বৈশাখীতে আসেন।
সাংসদ হাবিবুর রহমান বললেন, “নদী ভাঙনের গৃহহারাদের পুনর্বাসনের জন্য সবকিছু করা হবে। তাই সরেজমিনে এসেছি ত্রাণ দিতে এবং দেখতে।”