মঙ্গলবার সদর, বন্দর ও আড়াইহাজার উপজেলায় পাওয়া লাশগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে বন্দর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, সকাল ৯টায় উপজেলার নোয়াবদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ থেকে মিজান সিকদার মিশুদ (২৮) নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়।
মিজনকে হত্যার সন্দেহে মিঠু ও মুন্না নামের দুইজনকে আটক করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার মিঠু হোসেন (২৭) উপজেলার নোয়াবদার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে ও মুন্না হক (২০) একই এলাকার মঞ্জিল হকের ছেলে।
ওসি বলেন, গ্রেপ্তাররা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে যে পাওনা টাকাসহ বিভিন্ন কারণে তাদের মধ্যে বিরোধ ছিল। এ কারণে মিজানকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে মিঠু ও তার সহযোগিরা।
“তারা দুজন আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।”
নিহত মিজান সিকদার মিশুদ উপজেলা কাইতাখালি এলাকার শফি সিকদারের ছেলে, তিনি গার্মেন্টস শ্রমিক ছিলেন।
সোমবার রাত ১টায় মায়ের জন্য মশার কয়েল আনতে ঘর থেকে বের হন। কয়েল কিনে ফেরার সময় মিঠুর সঙ্গে দেখা হলে পাওয়া টানা দাবি করেন মিজান। কিন্তু টাকা পরিশোধে অস্বীকার করেন মিঠু।
“পরে মিজান রাগারাগি করলে মিঠুর সঙ্গে থাকা মুন্নাসহ আরও কয়েকজন মিজানকে মারধর করে নোয়াবদা স্কুল মাঠে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে তারা।”
এদিকে পরিবারের বরাত দিয়ে বন্দর থানার এসআই আবু তালেব বলেন, শান্তিনগর এলাকায় সোমবার রাতে গোসল করার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে শীতলক্ষ্যা নদীর উদ্দেশে আসতে থাকে বারেক মিয়া। কিন্তু রাস্তা আগে থেকে পরে থাকা বৈদ্যুতিক তারের সঙ্গে জড়িয়ে যান তিনি।
“সকালে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট অবস্থায় পাওয়া যায় তাকে। পরে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।”
নিহত বারেক মিয়া শান্তিনগর বালুরমাঠ এলাকার মৃত সামাদ মিয়ার ছেলে। তিনি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালাতেন।
এসআই তালেব বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, অন্ধকারে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বারেক মিয়া নিহত হন। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরেকটি ঘটনা ঘটে আড়াইহাজার উপজেলার ফতেপুর এলাকায়।
আড়াইহাজার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম বলেন, গুলজার হোসেনের একটি জমি বিক্রিকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৬টায় ফতেপুর সিডি মার্কেটের সামনে সুরুজ মিয়ার সঙ্গে একই এলাকার ফলান মিয়ার তিন ছেলে আবুল মিয়া, মোক্তার মিয়া ও রেজাউল মিয়ার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে তিন ভাই এক হয়ে সুরুজকে মারধর শুরু করে।
“এতে সুরুজ অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।”
নিহত সুরুজ মিয়া (৪০) উপজেলার বগাদি এলাকার মৃত অহেদ আলীর ছেলে। তিনি জমি কেনাবেচার দালাল ছিলেন।
পরিদর্শক শফিকুল বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা এবং মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে।
সদর উপজেলার ঘটনাটি ঘটে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি এলাকায়।
সকাল সাড়ে ৮টার দিকে অজ্ঞাত পরিচয় (২৫) এক যুবকের লাশ পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
নিহতের ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলের নখ দুর্বৃত্তরা প্লায়ার্স দিয়ে উপড়ে ফেলেছে। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কামড়সহ আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাসানুজ্জামান বলেন, ধারণা করা যাচ্ছে, অন্য কোথাও মারধর করে হত্যার পর লাশ এখানে ফেলে গেছে। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে।
তিনি আরও বলেন, নিহতের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হবে।
অন্যদিকে সদর উপজেলার ফতুল্লার লালখা এলাকায় সকালে কচু খেতের মধ্যে একটি অর্ধগলিত নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত শেফালী বেগম (৪২) দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মৃত আব্দুল হামিদের স্ত্রী। তিনি লালখা এলাকায় বসবাস করতেন।
পরিদর্শক হাসানুজ্জামান বলেন, ওই নারী গরীব ছিলেন। কচুর লতি তুলে বাজারে বিক্রি করতেন। ধারণা করা যাচ্ছে, ২ থেকে ৩ দিন আগে কচুর লতি তুলতে গিয়ে ডোবায় পড়ে যান। আর উঠতে না পেরে সেখানেই মারা যান। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।