রাবি শিক্ষকের যৌন হয়রানির সত্যতা মিলেছে: অনুসন্ধান কমিটি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) শিক্ষক বিষ্ণু কুমার অধিকারীর বিরুদ্ধে দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার কথা জানিয়েছে অনুসন্ধান কমিটি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 July 2019, 05:15 PM
Updated : 21 July 2019, 05:15 PM

রোববার ইনস্টিটিউটে এক সভায় অনুসন্ধান কমিটি এই রিপোর্ট জমা দিয়েছে বলে জানান ইনস্টিটিউটের পরিচালক আবুল হাসান চৌধুরী।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই সময়ই তাকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়। তারা শিক্ষার্থীদের লিখিত অভিযোগ ছাড়াও পরে তাদের এবং অভিযুক্ত শিক্ষকের বক্তব্য শুনেছেন।

“আমরা যতোটুকু অনুসন্ধানে পেয়েছি, তাতে করে তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের করা যৌন হয়রানি ও মানসিকভাবে উত্ত্যক্তের অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।”

রিপোর্টের সার সংক্ষেপ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জমা দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

গত ২৫ জুন আইইআরের চতুর্থ বর্ষের এক নারী শিক্ষার্থী পরিচালক ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর বিষ্ণু কুমার অধিকারীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিকভাবে উত্ত্যক্তের লিখিত অভিযোগ করেন। পরে দ্বিতীয় বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী আইইআর পরিচালকের কাছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় পরদিন ইনস্টিটিউটের এক জরুরি সভায় বিষ্ণু কুমারকে দ্বিতীয় ও চতুর্থ বর্ষের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

২৮ জুন অভিযোগপত্র প্রত্যাহার করার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে উল্লেখ করে নিরাপত্তা চেয়ে নগরীর মতিহার থানায় পৃথক সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন অভিযোগকারী দুই শিক্ষার্থী (জিডি নম্বর ১১০৮ ও ১১০৯)। এরপর ৩০ জুন শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে বিষ্ণু কুমারের বিচার দাবি করে।

সবশেষ ১ জুলাই সকল বর্ষের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে তার অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করে শিক্ষার্থীরা, যার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়।

তবে শুরু থেকেই নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আসছেন অধ্যাপক বিষ্ণু কুমার অধিকারী। ২৯ জুন অধ্যাপক বিষ্ণু কুমার অধিকারী এ ব্যাপারে গণমাধ্যম কর্মীদের লিখিত ব্যাখা দেন।

এতে তিনি উল্লেখ করেন, তার বিরুদ্ধে করা যৌন হয়রানি ও মানসিকভাবে উত্ত্যক্তের অভিযোগ সম্পূর্ণ কাল্পনিক, সাজানো, অসত্য, ষড়যন্ত্রমূলক, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন। তার ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এই চক্রান্তমূলক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে অভিযোগের সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানতে চাইলে অধ্যাপক আবুল হাসান বলেন, “আমরা আগামীকাল অনুসন্ধান প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করব। বাকিটা প্রশাসন দেখবে।”