কক্সবাজার হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ‘আন্তর্জাতিক মানে’

‘আন্তর্জাতিক মানের জরুরি’ স্বাস্থ্যসেবার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সংস্কার করা হয়েছে।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 July 2019, 01:14 PM
Updated : 20 July 2019, 01:17 PM

শনিবার আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির (আসিআরসি) অর্থায়ন ও ব্যবস্থাপনায় সংস্কারকৃত এ জরুরি বিভাগটির উদ্বোধন করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এবং আইসিআরসির যৌথ ব্যবস্থাপনায় এই জরুরি বিভাগটি চলবে, যেখানে স্থানীয় জনগণের পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদেরও স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আইসিআরসি বাংলাদেশের হেড অফ ডেলিগেশন জেরার্ড পেট্রিগনেট বলেন, স্থানীয় জনগণের পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর চাপে জর্জরিত কক্সবাজার সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগকে ঢেলে সাজাতে ২০১৮ সালের ১২ অগাস্ট স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকলল্পনা মন্ত্রণালয় এবং আইসিআরসি তিন বছর মেয়াদী সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছিল। তার অংশ হিসেবে হাসপাতালটির জরুরি বিভাগ নতুনভাবে সংস্কার করা হয়।

তিনি বলেন, নতুনভাবে সংস্কারের অংশ হিসেবে আইসিআরসি অবকাঠামো পুণর্নির্মাণ ও আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা সরঞ্জাম সহায়তা হিসেবে সরবরাহ করবে। এছাড়া জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ও নার্সদের বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষকদের দ্বারা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করেছে।

জরুরী বিভাগটিতে বিশ্বমানের জরুরি স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সদর হাসপাতলের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।

মহিউদ্দিন বলেন, ট্রায়াজ সিস্টেম অনুযায়ী রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে। এতে প্রাথমিক চিকিৎসার প্রয়োজন হবে এমন রোগীদের গ্রিন জোনে, এর চেয়ে খারাপ অবস্থাসম্পন্ন রোগীদের ইয়েলো জোনে বা অবজারভেশন বিভাগে এবং মুর্মূর্ষু রোগীদের রাখা  হবে রেড জোনে।

এ ধরনের ব্যবস্থায় একসঙ্গে ১০ জনের অধিক রোগী আসলেও চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেন হাসপাতালের এ তত্ত্ববধায়ক।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ও জরুরি বিভাগের প্রধান ডা. শাহীন আব্দুর রহমান বলেন, বিশ্বমানের এ জরুরি বিভাগে যুক্ত রয়েছে রোগ নির্ণয়ের আধুনিক যন্ত্রপাতি। এতে ট্রায়াজ সিস্টেমের প্রতিটি জোনে পুরুষ ও নারীদের জন্য আলাদা চিকিৎসার ব্যবস্থার রয়েছে। প্রতিটি জোনে পুরুষ ও নারীদের জন্য আলাদা এ ব্যবস্থায় চারটি করে সিট (আসন) রয়েছে।

আব্দুর রহমান বলেন, জরুরি বিভাগে আটজন চিকিৎসক, ১০ জন বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স এবং ১০ জন নিরাপত্তাকর্মী সংযুক্ত থাকবেন। এতে প্রতিটি শিফটে ২ জন করে প্রতিদিন ৩টি শিফটে ৬ জন চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করবেন। তাছাড়া শিফট অনুযায়ী নার্সরা এবং নিরাপত্তাকর্মীরাও দায়িত্ব পালন করবেন।  

“এতে বড় ধরনের অপারেশনের ব্যবস্থা না থাকলেও ছোটোখাটো (মাইনর) অপারেশনের বিশ্বমানের সেবা প্রদানের জন্য অপারেশন থিয়েটার রয়েছে বলে উল্লেখ হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত এ প্রধান।

“আব্দুর রহমান আরও বলেন, জরুরি বিভাগে সংযুক্ত হয়েছে আধুনিক অপারেশন থিয়েটার। এছাড়া রোগ নির্ণয়ের জন্য এবং চিকিৎসকদের জন্যও আলাদা কক্ষের ব্যবস্থা রয়েছে। রোগীদের বিনোদনের জন্যও রয়েছে টিভি দেখার  আলাদা কক্ষের ব্যবস্থা।”

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজার সদর আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল।

অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন আইসিআরসি বাংলাদেশের হেড অফ ডেলিগেশন জেরার্ড পেট্রিগনেট, কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, আইসিআরসি কক্সবাজার অিফিসের হসপিটাল প্রজেক্ট ম্যানেজার রিচার্ড উইলিয়াম কুকসহ আইসিআরসি এবং স্বাস্থ্য বিভাগের িঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাইমুম সরওয়ার বলেন, আইসিআরসির সহায়তায় সংস্কারকৃত জরুরি বিভাগটি চালু হওয়ার মধ্য কক্সবাজারবাসীর বিশ্বমানের জরুরি চিকিৎসার সেবা নিশ্চিত হল। এটি অত্যন্ত সুখকর বিষয়।