মিন্নিকে নির্যাতন করে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছে: বাবা

আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে নির্যাতন করে স্বামী শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বাবা।

বরগুনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 July 2019, 04:15 PM
Updated : 19 July 2019, 04:15 PM

শুক্রবার বিকালে মিন্নি বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে জবানবন্দি দিয়ে বেরোনোর পর এই অভিযোগ করেন তিনি।

মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর আদালতের সামনে চিৎকার করে বলেন, “আমার মেয়েকে নির্যাতন শেষে আদালতে আনা হয়েছে। জোর করে তার স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছে।”

তার অভিযোগ অস্বীকার করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরগুনা থানার পরিদর্শক হুমায়ূন কবীর বলেন, “তিনি (মিন্নি) স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালতে তিনি কী বলেছেন সে সম্পর্কে আমি কিছু জানি না।”

গত ২৬ জুন রিফাতকে প্রকাশ্য সড়কে কুপিয়ে হত্যার সময় স্বামীকে বাঁচাতে মিন্নির চেষ্টার ভিডিও ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ঘটনাটি সারাদেশে আলোচনায় উঠে আসে।

পরদিন শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফের বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর ১২ জনকে আসামি করে যে মামলাটি করেন, তাতে প্রধান সাক্ষী করা হয়েছিল মিন্নিকেই।

সম্প্রতি মিন্নির শ্বশুর তার ছেলের হত্যাকাণ্ডে পত্রবধূর জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করলে আলোচনা নতুন দিকে মোড় নেয়। এ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মঙ্গলবার সকালে মিন্নিকে থানায় ডেকে নেওয়া হয়। দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে তাকে গ্রেপ্তারের কথা জানান বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন।

সে সময় তিনি বলেছিলেন, “ওই হত্যাকাণ্ডে মিন্নির সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।”

এরপর বুধবার মিন্নিকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডে চায় পুলিশ, আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে।

রিমান্ডের দ্বিতীয় দিনের মাথায় শুক্রবার দুপুর ২টায় জবানবন্দি দেওয়ার জন্য মিন্নিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক মো. সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে জবানবন্দি দেন তিনি।

এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা হুমায়ূন কবীর বলেন, “পাঁচ দিনের জন্য হেফাজতে নেওয়া হলেও মিন্নির কাছে আমাদের যা জানার ছিল তা জানা হয়ে গেছে। তাই শুক্রবারই তাকে আদালতে পাঠানো হয়।”

জবানবন্দি শেষে সন্ধ্যা ৭টার দিকে আদালত থেকে বের হলে পুলিশি নিরাপত্তায় মিন্নিকে বরগুনা কারাগারে পাঠানো হয় বলে তিনি জানান।

এ মামলার এজাহারভুক্ত ছয়জন ও মিন্নিসহ মোট ১৩ জনকে এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হত্যা মামলার মূল আসামি সাব্বির আহম্মেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।