তবে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর অভিযোগ করেছেন, তার মেয়েকে নির্যাতন করে তার স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরগুনা থানার পরিদর্শক হুমায়ূন কবীর বলেন, শুক্রবার বেলা ২টায় তাকে বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক মো. সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে হাজির করা হলে তিনি এই জবানবন্দি দেন।
বুধবার পুলিশ মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের হেফাজতে চেয়ে আবেদন করে। একই বিচারক শুনানি শেষে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পরিদর্শক হুমায়ূন বলেন, “পাঁচ দিনের জন্য হেফাজতে নেওয়া হলেও মিন্নির কাছে আমাদের যা জানার ছিল তা জানা হয়ে গেছে। তাই শুক্রবারই তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
“তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালতে তিনি কী বলেছেন সে সম্পর্কে আমি কিছু জানি না।”
জবানবন্দি শেষে সন্ধ্যা ৭টার দিকে আদালত থেকে বের হলে পুলিশি নিরাপত্তায় মিন্নিকে বরগুনা কারাগারে পাঠানো হয় বলে তিনি জানান।
মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর আদালতের সামনে হাজির হয়ে চিৎকার দিয়ে বলেন, “আমার মেয়েকে নির্যাতন শেষে আদালতে আনা হয়েছে। জোর করে তার স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছে।”
এর আগে মঙ্গলবার বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বলেছিলেন, “ওই হত্যাকাণ্ডে মিন্নির সংশ্লিষ্টতার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।”
গত ২৬ জুন রিফাতকে প্রকাশ্য সড়কে কুপিয়ে হত্যার সময় স্বামীকে বাঁচাতে মিন্নির চেষ্টার ভিডিও ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ঘটনাটি সারাদেশে আলোচনায় উঠে আসে।
পরদিন শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফের বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর ১২ জনকে আসামি করে যে মামলাটি করেন, তাতে প্রধান সাক্ষী করা হয়েছিল মিন্নিকেই।
সম্প্রতি মিন্নির শ্বশুর তার ছেলের হত্যাকাণ্ডে পত্রবধূর জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করলে আলোচনা নতুন দিকে মোড় নেয়।
তবে শ্বশুর অভিযোগ তোলার পর মিন্নি তা অস্বীকার করে পাল্টা বলেছিলেন, দুলাল শরীফ ‘ষড়যন্ত্রকারীদের প্ররোচনায়’ পড়ে তাকে জড়িয়ে ‘বানোয়াট’ কথা বলছেন।
এ মামলার এজাহারভুক্ত ছয়জন ও মিন্নিসহ মোট ১৩ জনকে এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হত্যা মামলার মূল আসামি সাব্বির আহম্মেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।