সারিয়াকান্দি ও সোনাতলার সংসদ সদস্য বৃষ্টির জন্য ফেরতযোগ্য তাঁবু চেয়েছিলেন উল্লেখ করে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আজহার আলী মন্ডল বলেন, “তাঁবুর মজুদ আছে। তাঁবু নেওয়ার খরচ উপজেলা প্রশাসন দিচ্ছে না। সে কারণে তাঁবুও দেওয়া হচ্ছে না।”
ধুনটের শহড়াবাড়ির বাঁধের পূর্বপাড়ের আলিম বলেন, “শহড়াবাড়ি ঘাটের রাস্তা বন্যার পানিতে ভেঙে গিয়ে ঘরবাড়ি ভেসে গেছে। বাঁধে আশ্রয় নিয়েছি। খোলা আকাশের নিচে আছি এখন।
“একটি তাঁবু পেলে অন্তত বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচা যাবে।”
একই কথা বললেন রহিমা বেগম, নছিমন ও হাজেরা।
খোলা জায়গায় রান্না করার উল্লেখ করে তারা জানান, বৃষ্টি এলে এই রান্নাটাও করতে পারবেন না।
“তাঁবু আমাদের খুবই জরুরি।”
সারিয়াকান্দি উপজেলার বোহাইল ও আওলাকান্দি চর, ধুনটের রাধানগর ও বৈশাখী চরের অধিকাংশ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে। খোলা আকাশের নিচে গবাদিপশু নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে।
ঘরবাড়িতে পানি, খোলা আকাশের নিচে বৃষ্টি আতঙ্ক। সাপের উপদ্রব। একদিকে গবাদিপশুর খাবার নেই। তারপরেও বিশুদ্ধ পানির জন্য কোনো টিউবওয়েলের ব্যবস্থা নেই। নেই টয়লেট ব্যবস্থা। এমনিভাবেই তাদের প্রায় এক সপ্তাহ কেটেছে।
গোসাইবাড়ি চুনিয়াপাড়ার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নেওয়া বোহাইল চরের আসমা বেগম বলেন, “বাড়িতে পানি উঠেছে। বাক্সটা বানে ভেসে গেছে। চুনিয়া পাড়ায় বাঁধে আছি।
“এখনও কোনো রিলিফ পাইনি।”
ভান্ডারবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান আপেল জানান, ২০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পেয়েছেন।
“কিছু দিয়েছি, বাকিটা পর্যায়ক্রমে দেওয়া হবে। শুকনো খাবার ৫শ’ প্যাকেট পেয়েছি। সেগুলো বিতরণ করা হয়েছে।”
সাপের উপদ্রব নিয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি নজরে রেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় যমুনার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১২৮ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, সারিয়াকান্দি থেকে ধুনট ৪৫ কিলোমিটির বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বেশকিছু জায়গায় লিকেজ দেখা দিয়েছে। ভয়ের কোনো কারণ নেই। পানি বাড়লে এধরনের লিকেজ হয়েই থাকে। আশা করছি আগামী কাল থেকে পানি কমতে থাকবে।