জেলার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে এ খবর দেন।
রিশানকে সকাল ১০টার দিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানালেও কোথা থেকে তাকে ধরা হয়েছে, সে তথ্য তিনি দেননি।
বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে রিশান ও তার ভাই রিফাত ফরাজী এ মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ডের সহযোগী।
পুলিশ দুই সপ্তাহ আগে রিফাত ফরাজীকে গ্রেপ্তার করলেও নয়ন ‘বন্দুকযুদ্ধে’ গত ২ জুলাই নিহত হয়েছেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
রিফাত শরীফের স্ত্রী এ মামলার ১ নম্বর সাক্ষী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে মঙ্গলবার দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর রাতে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
বুধবার তাকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
বৃহস্পতিবার সকালের সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, “যারা হত্যাকারী ছিল শুরু থেকে মিন্নি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে এবং সে এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনার অংশ। এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পূর্বেও সে পরিকল্পনার জন্য মিটিং করেছে হত্যাকারীদের সাথে।”
অবশ্য মিন্নি বুধবার রিমান্ড শুনানিতে আদালতকে বলেন, “আমার স্বামী রিফাত শরীফ। আমি আমার স্বামীর হত্যাকারীদের বিচার চাই। হত্যাকাণ্ডে আমি জড়িত নই। এ মামলায় আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে।”
গত ২৫ জুন সকালে জেলা শহরের কলেজ রোডে রিফাত শরীফকে (২৩) স্ত্রীর সামনেই কুপিয়ে জখম করে একদল যুবক। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রিফাতের মৃত্যু হয়।
রিফাতের ওপর হামলার ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে শুরু হয় আলোচনা। সেখানে দেখা যায়, দুই যুবক রামদা হাতে রিফাতকে একের পর এক আঘাত করে চলেছে। আর তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি স্বামীকে বাঁচানোর জন্য হামলাকারীদের ঠেকানোর চেষ্টা করছেন।
বরগুনার সরকারি কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্রী মিন্নি হামলাকারী সবাইকে চিনতে না পারার কথা জানালেও নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজী ও তার ভাই রিশান ফরাজীর নাম বলেছিলেন।
রিফাত খুন হওয়ার পরদিন তার বাবা দুলাল শরীফ ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় মামলা করেন। সেখানে ১ নম্বরে নয়ন, ২ নম্বরে রিফাত ফরাজী এবং ৩ নম্বরে রিশান ফরাজীর নাম ছিল।
রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, তাদের মধ্যে আটজন এজাহারভুক্ত আসামি। গ্রেপ্তারদের মধ্যে ১০ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরগুনা থানার পরিদর্শক মো. হুমায়ুন কবির জানান, এ মামলায় গ্রেপ্তার তিনজন এখনো রিমান্ডে রয়েছেন। তাদের মধ্যে আরিয়ান শ্রাবণকে বৃহস্পতিবার বিকালে আদালতে হাজির করা হবে।