বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য নিশ্চিত করেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা।
গ্রেপ্তাররা হলেন বিজিবি সদস্য সাদেক মিয়া, সাদেকের ভাগ্নে আফরোজ মিয়া (২৭), মাইক্রোবাস চালক ইউসুফ সরদার (৩২), মামুন মিয়া (৩৫), জসিম উদ্দিন (৩১) ও শামীম সরদার।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, সাদেকের পরিকল্পনা অনুযায়ী চুনারুঘাট উপজেলার পাট্টাশরীফ গ্রামের মৃত মকসুদ আলীর ছেলে দুলা মিয়াকে (৪০) অপহরণ করে খুনিরা। পরে ঢাকার হাজারীবাগে সিকদার মেডিকেলের পেছনে গলায় দড়ি পেঁছিয়ে হত্যার পর মরদেহে বস্তাবন্দি করে ফেলে দেওয়া হয় বুড়িগঙ্গা নদীতে।
সেখান থেকে ১৮ জুন মরদেহ উদ্ধার করে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে জুরাইন কবরস্থানে দাফন করে হাজারীবাগ থানা পুলিশ। সেখানে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয় বলে এসপি জানান।
তিনি বলেন, এদিকে গত ৩০ জুন ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বিজিবি সদস্য সাদেকের ভাগ্নে আফরোজ মিয়াকে শ্রীমঙ্গল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। স্থানীয় এক যুবকের মোবাইল ফোনে ধারণ করা ছবির সূত্র ধরে গত ১৪ জুলাই ঢাকা থেকে অপহরণ কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস জব্দ করে পুলিশ।
“এরপর আফরোজের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ভোলার লামোহন উপজেলার মৃত আজিজ মিয়ার ছেলে মাইক্রোবাস চালক ইউসুফ সরদার ও কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার টামনিকোনা পাড়ার লাল মিয়ার ছেলে মামুন মিয়া ধরা পড়ে পুলিশের হাতে।”
ইউসুফ ও মামুন হবিগঞ্জে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তৌহিদুল ইসলামের আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন বলে এসপি জানান।
তিনি আরও বলেন, এক পর্যায়ে গত সোমবার চুনারুঘাট থানার ওসি নাজমুল হক কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের শেখেন্দর আলীর ছেলে জসিম উদ্দিন (৩১) ও বরিশালের গৌরনদী উপজেলার তাজেম সরদারের ছেলে শামীম সরদারকে ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করেন।
আসামিদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, দুলা মিয়ার ৫ শতাংশ জমি দখলের পাঁয়াতারায় লিপ্ত ছিল তার চাচা বিজিবি সদস্য সাদেক। এ নিয়ে অনেক মামলা মোকদ্দমা হলেও সেখানে কোনো প্রতিবার পাননি সাদেক।
“পরে উল্লেখিত আসামিদেরকে ভাড়া করে দুলা মিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় ১৭ জুন চুনারুঘাটের পাট্টা শরীফ গ্রাম থেকে দুলাকে অপহরণ করা হয়। অপহরণ কাজে সাদেকের ভাগ্নে আফরোজ সার্বিক সহযোগিতা করেন।”
এদিকে, বুধবার বিকালে ঢাকার জুরাইন কবরস্থান থেকে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দুলা মিয়ার মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে।