বুধবার জেলা শহরের মধুপুর এলাকায় যুবলীগ নেতা সাখাওয়াত হোসেনের নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে বলে ফেনী মডেল থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানান।
‘আশঙ্কাজনক’ অবস্থায় সাখাওয়াতকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, দুপুরে শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মধুপুরে সাখাওয়াত তার নিজ বাড়িতে ঘুমিয়েছিলেন। এ সময় অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজন হামলাকারী তার বাড়ি লক্ষ্য করে ফাঁকা গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে বাড়িতে ঢুকে ভাংচুর চালায়।
হামলাকারীরা এ সময় সাখাওয়াতকে এলালাপাথাড়ি কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে। পরে তার আর্তচিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায় বলে এলাকাবাসী জানান।
স্থানীয়রা প্রথমে আহত সাখাওয়াত হোসেনকে উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় পাঠানো হয়।
ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আবু তাহের বলেন, “সাখাওয়াতের শরীরে একাধিক কোপ ও ছুরিকাঘাতের চিহৃ রয়েছে। তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।”
ফেনী মডেল থানার ওসি আলমগীর হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।
ফেনী-২ আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীর বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলায় ‘সাজা কম খেটে বেরিয়ে যাওয়া’র ঘটনায় তার সংসদ সদস্য পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেছিলেন সাখাওয়াত হোসেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। সম্প্রতি তিনি বাড়ি আসেন।
‘সাজা কম খেটেই বেরিয়ে যান সাংসদ’ শিরোনামে ২০১৪ সালের ১০ মে প্রথম আলোতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন যুক্ত করে নিজাম হাজারীর এমপি পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদনটি করেন ফেনী জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সাখাওয়াত।
২০০০ সালের ১৬ অগাস্ট অস্ত্র আইনের এক মামলায় দুটি ধারায় ১০ বছর ও সাত বছর কারাদণ্ড হয় নিজাম হাজারীর, যা আপিলেও বহাল থাকে।
সে হিসাবে নিজাম হাজারী ২০১৫ সালের আগে সংসদ সদস্য পদে নির্বাচিত হওয়ার যোগ্য না হলেও তিনি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে সাংসদ হয়ে যান বলে অভিযোগ করা হয় রিট আবেদনে।
বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিজাম উদ্দিন হাজারীর বিরুদ্ধে ছিলেন সাখাওয়াত। এছাড়া এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সদরে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুর রহমানের বিপক্ষে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী জেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক এম আজহারুল হক আরজুর পক্ষে সক্রিয়ভাবে প্রচারে অংশ নিয়েছিলেন।
নির্বাচনের আগের রাতে নিজ দলের কয়েকজন স্থানীয় নেতা তাকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন। পরে পুলিশ পুরোনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে কারাগারে পাঠায়। সম্প্রতি তিনি জামিনে বেরিয়ে বাড়িতে অবস্থান করছিলেন।