পৌর কর্মচারী আন্দোলন: ময়লায় সয়লাব রাঙামাটি

বেতন-ভাতার দাবিতে দেশজুড়ে পৌরসভার কর্মচারীদের আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাঙামাটিতে কর্মবিরতির কারণে পৌরশহর ময়লায় ভরে গেছে। সন্ধ্যা হলে জ্বলছে না সড়কবাতিও।

ফজলে এলাহী রাঙামাটি প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 July 2019, 04:12 PM
Updated : 16 July 2019, 04:16 PM

রাজস্বখাত থেকে বেতন প্রদান ও পেনশনের দাবিতে সারাদেশে পৌরসভার কর্মচারীরা ঢাকায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। রাঙামাটি পৌরসভার কর্মচারীদের একটি দল ঢাকায় অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিতে গেছেন আর অন্যরা পালন করছেন কর্র্মবিরতি।

আন্দোলনরত কর্মচারীরা জানান, ১৯৭২ সালে ৬৪ দশমিক ৭৫ বর্র্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে গড়ে ওঠা রাঙামাটি পৌরসভায় ১৮০ জন কর্মচারী রয়েছেন। যাদের মধ্যে ৭৯ জন স্থায়ী, বাকি ১০১ জন অস্থায়ীভাবে কাজ করছেন। বর্তমানে এদের বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধাখাতে মাসে ৩৮ লাখ টাকা খরচ হয়।  

কর্মবিরতি পালন করায় পরিচ্ছন্নতা অভিযানসহ সব নাগরিক সেবাও বন্ধ হয়ে গেছে এই পর্যটন নগরীতে। শহরের মোড়ে মোড়ে, বাজারের গলিতে কয়েকদিনের ময়লা আবর্জনার স্তূপ হয়ে পড়ে আছে। এ নিয়ে বিব্রত হলেও কিছু করার নেই বলে জানালেন পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী।

পথে পথে ময়লার স্তূপ, রাতে সড়কবাতি না জ্বালা, জন্মনিবন্ধন সনদ না পাওয়ায় পৌরসভা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে উল্লেখ করে আকবর বলেন, “আমিও চাই তারা সুযোগ-সুবিধা পাক। কিন্তু নাগরিক সেবা বন্ধ রাখলে পৌরসভা প্রশ্নবিদ্ধ হয়, আন্দোলনে সাধারণ মানুষের সমর্থনও কমে যায়।

“আমি তাদের অনুরোধ করেছি যেন জরুরি নাগরিক সেবাগুলো চালু রেখে আন্দোলন করেন।”

পৌরবাসীর কষ্টের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে রাঙামাটি পৌর কর্মচারী সংসদের সাধারণ সম্পাদক সনৎ বড়ুয়া বলেন, “কয়েক বছর ধরেই ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করে আসছি, স্বাভাবিক কাজকর্ম অব্যাহত রেখেছি দিনের পর দিন। এখন আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।

“আমরা বাধ্য হয়েই কঠোর ও কঠিন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছি, যাতে সারাদেশের ৩২৮ পৌরসভার ৩২ হাজার ৫০০ কর্মচারী যোগ দিয়েছে।”

বছরের পর বছর পৌরবাসীকে রোদ ঝড় বৃষ্টিতে সেবা দিয়ে মাস শেষে তাদের বেতনের খবর থাকে না, চাকরি শেষে পেনশন পান না বলে খেদ করে তিনি পৌরবাসীর উদ্দেশে বলেন, “এটার জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে আমাদের জন্য দুচারটা দিন কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতাও কি রাঙামাটিবাসীর নাই?’

পৌর কর্মচারীদের দাবি যৌক্তিক উল্লেখ করে রাঙামাটির সাংবাদিক সুনীল কান্তি দে বলেন, ‘সরকার দাবি বাস্তবায়ন করার কর্তৃপক্ষ। মাঝখানে আমরা পৌরবাসীকে কষ্ট দেওয়ার কোনো মানে হয় না। তাদের দাবি বাস্তবায়নের জন্য তো জরুরি সেবা বন্ধ থাকতে পারে না “

রাঙামাটির তরুণ নাগরিক আন্দোলনের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম মুন্না বলেন, আমরা সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাই যেন তাদের দাবি মেনে নেয় এবং সারাদেশের মতো আমাদের রাঙামাটিবাসীকেও এই দুরাবসস্থা থেকে উদ্ধার করে।”