টাঙ্গাইলে আইনজীবী হাসান আলী হত্যায় গ্রেপ্তার ৪, একজনের স্বীকারোক্তি

টাঙ্গাইলের প্রবীণ আইনজীবী মুক্তিযোদ্ধা মিয়া মোহাম্মদ হাসান আলী রেজা হত্যায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, যাদের একজন আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

টাঙ্গাইল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 July 2019, 03:28 PM
Updated : 16 July 2019, 04:00 PM

মঙ্গলবার বিকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ওয়াজেদ আলী এ কথা জানান।

গ্রেপ্তাররা হলেন শহরের আকুর টাকুর মুসলিম পাড়ার কল্পনা রানী সরকার (৩৮), তার স্বামী তপন কুমার সরকার (৪৫), তাদের ছেলে তন্ময় কুমার সরকার (২১) এবং শহরের সাবালিয়া এলাকার মকবুল হোসেনের ছেলে শরিফ হোসেন (৪২)।

এদের মধ্যে প্রথম তিনজনকে সোমবার এবং শেষেরজনকে মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করা হয় বলে তিনি জানান।

টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি সায়েদুর রহমান বলেন, আইনজীবী মিয়া মোহাম্মদ হাসান আলী রেজাকে হত্যার ঘটনায় তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে সোমবার কল্পনা রানী সরকারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

“পরে তার দেওয়া তথ্যানুসারে আইনজীবী হাসান আলী রেজার লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর তার স্বামী ও ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”

আদালত পুলিশের পরিদর্শক (প্রশাসন) তানবীর আহাম্মেদ বলেন, মঙ্গলবার বিকালে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ওয়াজেদ আলী গ্রেপ্তার তিনজনকে আমলি আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চান।

“আমলী আদালতের বিচারক অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মনিরা সুলতানা তিনদিন করেন তপন কুমার ও ছেলে তন্ময় কুমারের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এছাড়া একই আদালতে কল্পনা রানী সন্ধ্যায় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও তিনি জানান।

পরিদর্শক তানবীর আরও বলেন, রিমান্ডে নেওয়া দুই জনের দেওয়া তথ্যমতে মঙ্গলবার শহরের সাবালিয়া থেকে শরিফ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে একই আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।

জবানবন্দির পর কল্পনাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া তিন আসামি পুলিশ হেফাজতে রয়েছে বলে জানান ওসি সায়েদুর রহমান।

হাসান আলী

হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কারণ জানতে চাইলে এসআই ওয়াজেদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, শুধু প্রাথমিকভাবে এতটুকু জেনে রাখুন, ওই আইনজীবী মারা যাওয়ার আগে কল্পনা রানীর সঙ্গে চারবার মোবাইল ফোনে কথা বলেছেন।

“তদন্ত কেবল শুরু হয়েছে। বাকি ঘটনা তদন্ত শেষে এবং আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তির কাগজ হাতে আসলে জানানো হবে। হাসান আলীকে নিয়ে পুলিশের কাছে প্রাথমিকভাবে আপত্তিকর কথাবার্তা বলছে কল্পনা। তাই তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আরও সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হচ্ছে।”

হাসান আলী রেজা গত ৮ জুলাই সন্ধ্যার পর টাঙ্গাইল শহরের সাবালিয়া পাঞ্জাপাড়াস্থ নিজ বাসা থেকে চা খেতে বাইরে বের হয়ে নিখোঁজ হন। এর পাঁচদিন পর গত ১৩ জুলাই দুপুরে শহরের আকুর টাকুর এলাকায় লৌহজং নদী থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিখোঁজ হওয়ার পর টাঙ্গাইল সদর থানায় মিয়া মোহাম্মদ হাসান আলীর রেজার ছেলে রাশেদুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।