মুস্তাফিজের জাঁকজমকপূর্ণ বৌভাত

সদ্য বিশ্বকাপ খেলে ফেরা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের তারকা বোলার মুস্তাফিজুর রহমানের বৌভাত হয়ে গেল জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে।

শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন সাতক্ষীরা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 July 2019, 03:33 PM
Updated : 13 July 2019, 05:01 PM

বিয়ের প্রায় চার মাস পর শনিবার মুস্তাফিজের বাবার বাড়ি সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার তারালি ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া গ্রামে বৌভাতের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

দুপুর আড়াইটায় মুস্তাফিজের মামা ও বর্তমান শ্বশুর রওনাকুল ইসলাম বাবুসহ শ্বশুরালয়ের আত্মীয়রা পৌঁছান কালিগঞ্জের তেঁতুলিয়ার আবুল কাশেম গাজীর বাড়িতে। মুস্তাফিজের বাবা-মাসহ স্বজনরা অতিথিদের আপ্যায়ন করেন।

বৌভাতকে জাঁকজমকপূর্ণ করতে মুস্তাফিজের বাড়ি সাজানো হয়েছে নানা রঙে। আয়োজন ছিল দুই হাজার অতিথির। অতিথিদের জন্য বিরাট প্যান্ডেল বানানো হয়। তৈরি করা হয় উঁচু তোরণ।

মুস্তাফিজুর রহমানের বড়ো ভাই মাহফিজুর রহমান মিঠু বলেন, বউভাত অনুষ্ঠানে প্রায় দুই হাজার অতিথিকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে। তবে আয়োজন ছিল আড়াই হাজার মানুষের।

“খাবার তালিকায় ছিল খাসি ও গরুর মাংসের বিরিয়ানি, খাসি ও গরুর মাংসের রেজালা, মুরগির মাংস, ভেটকি, চিংড়ি মাছ, ডিম সেদ্ধ, দই ও কোমল পানীয়।”

মুস্তাফিজের সিনিয়র-জুনিয়র টিমমেট ও টিম ম্যানেজমেন্ট সদস্যদের সম্মানে ঢাকায় আরেকটি বৌভাত হবে বলেও মাহফিজুর জানান।

অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে অতিথিদের মাঝে আসেন বর-কনে। তারা অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় এবং তাদের বসার স্থান তদারকি করেন। এছাড়া মুস্তাফিজকে বাবুর্চির কাছে খাবারের খোঁজ নিতেও দেখা গেছে।

মুস্তাফিজ দম্পতি অতিথিদের কাছে দোয়া চাইলেন। খেলা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

এ সময় মুস্তাফিজ বলেন, “জানেনই তো ক্রিকেট নিয়ে কোনো কথা বলা নিষেধ রয়েছে বিসিবি থেকে।”

আগত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মুনসুর আহমেদ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান প্রমুখ।

অতিথিদের আপ্যায়ন করেন মুস্তাফিজের বাবা আবুল কাশেম গাজী, মা মাহমুদা খাতুন, বড়ো বোন সাবেরা পারভিন, বড়ো ভাই মাহফিজুর রহমান মিঠু, মেজ ভাই জাকির হোসেন, সেজ ভাই মোকলেছুর রহমান পল্টু, বোন সালেহা মাহমুদা। এছাড়াও ছিলেন দুই ভাবি।

আবুল কাসেম ছেলে ও ছেলে বউয়ের জন্য দোয়া চেয়ে বলেন, “সে যেন ক্রিকেটে আরও ভালো নৈপুণ্য দেখাতে পারে। আগামী বিশ্বকাপ যেন বাংলাদেশের ঘরে ওঠে এই প্রত্যাশা করি।”

মাহফিজুর রহমান মিঠু বলেন, “মুস্তাফিজকে নিয়ে আমরা অনেক স্বপ্ন দেখি। তার পারফরমেন্সে আমরা হ্যাপি; তবে আরও হ্যাপি হতাম যদি বাংলাদেশ ফিরে না আসত।”

আ ফ ম রুহুল হক মুস্তাফিজকে দেশের সম্পদ উল্লেখ করে তার জন্য সব মানুষের দোয়া কামনা করেন।

গত ২২ মার্চ মুস্তাফিজের শ্বশুর ও নওয়াপাড়া ইউপির সাবেক সদস্য রওনাকুল ইসলাম বাবুর বাড়িতে তাদের বিয়ে হয়। বাবুর মেয়ে সামিয়া পারভিন সিমুর সঙ্গে মুস্তাফিজের বিয়ে হয়। সিমু পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তৃতীয়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ছাত্রী।

বিয়ের সময়ই মুস্তাফিজের পরিবার জানিয়েছিল বিশ্বকাপ শেষে শিমুকে বধূবরণে তুলে নেওয়া হবে বাড়িতে।