রাবির বাগানে লিচু কাণ্ডে ছাত্রলীগের ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের বাগান থেকে লিচু পেড়ে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতিসহ সংগঠনটির সাত নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও লিচু চুরির মামলা করেছেন এক ইজারাদার।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 July 2019, 07:48 AM
Updated : 10 July 2019, 07:55 AM

লিচু বাগান ইজারা নেওয়া আবদুল্লা ইবনে মনোয়ার রাজশাহী মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতে গত ১৫ মে এই মামলা করেন বলে তার আইনজীবী মিজানুর রহমান বাদশা জানান।

মামলার আসামিরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া, সহ-সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, আইন বিভাগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান আলী, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান কানন, উপ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান আশিক ও কর্মী মেহেদী হাসান বিজয়।

বাদশা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বহিরাগত মো. আকাশ নামের ছাত্রলীগের এক কর্মীকে কজনকেও এই মামলায় আসামি করা হয়েছে। চলতি মাসের ১৬ জুলাই আসামিদের আদালতে হাজিরার জন্য ডাকা হয়েছে।

গত ৭ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের পেছনে গোদাগাড়ী বাগানে আট ছাত্রলীগ নেতাকর্মী লিচু পাড়তে গেলে তাদের বেধড়ক মারধর করে বাগানের পাহাড়াদারেরা। এতে ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মাহমুদুর রহমান কাননের দুই হাত ভেঙে যায় এবং উপ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক মেহেদি হাসানের পায়ে গুরুতর জখম হয়।

ঘটনার জেরে পর দিন সেই বাগানের সব লিচু পেড়ে নেয় সংগঠনটির একদল নেতাকর্মী। যদিও সেসময় ছাত্রলীগ দাবি করেছিল সাধারণ শিক্ষার্থীরা লিচু পেড়েছে।

এ ঘটনায় ছাত্রলীগ বাগান মালিকসহ বেশ কয়েকজনের নামে মামলাও করে সেসময়।

মামলার বরাতে বাদী পক্ষের  এ আইনজীবী বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের পাশের বাগানের আম ও লিচু চলতি মৌসুমসহ দুই মৌসুমের জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ইজারা নেওয়া হয়।

“গত ৭ মে রাতে মামলার আসামিরাসহ আরও  ১৫/২০ জন মামলার  বাদীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তারা বাদীকে দুই দিনের মধ্যে টাকা পৌঁছে দিতে বলেন। না হলে বাদীকে বাগান থেকে আম ও লিচু না পাড়তে দেওয়ার হুমকি দেন। এরপর ৯ মে বেলা ৪টায় তারা বাগানের লিচু পাড়তে থাকে।”

এজহারে আরও উল্লেখ করা হয়, বাগানের পাহাড়াদার লিচু পাড়তে নিষেধ করলে প্রথম আসামি গোলাম কিবরিয়া তাকে কিল ঘুষি মারে এবং মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে বাগান হতে দূরে সরে যেতে বলে।

পরে আসামিরা বাগানে প্রায় দেড় লাখ টাকার লিচু চুরি করে। বাগানের পাহাড়াদার কিছু দূরে গিয়ে মোবাইল ফোনে বাদীকে ঘটনাটি জানালে আসামিরা চুরি করা লিচুসহ দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

মামলার বাদী মনোয়ার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, লিচু পেড়ে নেওয়ার পর আমাদের নামেই উল্টো মামলা করে। পরে তিনি আদালতে মামলাটি করেন। 

মনোয়ারের অভিযোগ, “মামলা করার পর থেকে বাদী ও সাক্ষীদের নানাভাবে হুমকি দেওয়া দিচ্ছে আসছে ছাত্রলীগ। আমারা হুমকির মুখে রয়েছি।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, “আমি কোনো ধরনের চাঁদা দাবি করিনি। আর যারা বাগানটির টেন্ডার নিয়েছে তারা জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে জড়িত। আমাকে ও ছাত্রলীগকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার উদ্দেশ্যে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমি তাদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করব।”