টাঙ্গাইলের সাবেক সাংসদ রানা এখন মুক্ত

দুই হত্যা মামলায় সর্বোচ্চ আদালত থেকে পাওয়া জামিনে প্রায় তিন বছর পর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন টাঙ্গাইলের আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক সাংসদ আমানুর রহমান খান রানা।

টাঙ্গাইল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 July 2019, 06:33 AM
Updated : 9 July 2019, 06:35 AM

টাঙ্গাইল জেলা কারাগারের জেলার আবুল বাশার জানান, জামিনের কাগজপত্র হাতে পাওয়ার পর মঙ্গলবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে রানাকে মুক্তি দেন তারা।

স্থানীয় আওয়ামী নেতারা জানান, কারাগার থেকে বেরিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার আশায় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন রানা।

মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় রানাকে হাই কোর্টের দেওয়া জামিন গত ১ এপ্রিল আপিল বিভাগেও বহাল থাকে। কিন্তু টাঙ্গাইলের যুবলীগের দুই নেতা হত্যার মামলায় জামিন না হওয়ায় তার মুক্তি মিলছিল না।

ওই মামলাতেও টাঙ্গাইল-৩ আসনের সাবেক সাংসদ রানাকে হাই কোর্টের দেওয়া জামিন সোমবার বহাল রেখে আদেশ দেয় আপিল বিভাগ। সেই জামিনের কাগজ কারাগারে পৌঁছানোর পর মুক্তি মিললো আলোচিত এই আসামির। 

২০১২ সালের ১৬ জুলাই টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা শামীম ও মামুন মোটর সাইকেলে করে টাঙ্গাইল শহরে গিয়ে নিখোঁজ হন। পরদিন শামীমের মা আছিয়া খাতুন টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

ওই ঘটনায় ২০১৩ সালের ৯ জুলাই নিখোঁজ মামুনের বাবা টাঙ্গাইল আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করলে তদন্ত করে ওই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর মামলাটি তালিকাভুক্ত করে পুলিশ।

পরে এ মামলায় গ্রেপ্তার খন্দকার জাহিদ, শাহাদত হোসেন ও হিরণ মিয়ার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুন হত্যার ঘটনায় আমানুর রহমান খান রানার নাম উঠে আসে।

অন্যদিকে ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।

ঘটনার তিন দিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় মামলা করেন। প্রথমে মামলাটি টাঙ্গাইল মডেল থানা পুলিশ তদন্ত করলেও পরে তদন্তের ভার দেওয়া হয় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে।

তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রয়ারি রানা এবং তার তিন ভাইসহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

নানাভাবে দীর্ঘদিন গ্রেপ্তার এড়ানোর পর ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইলের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন তখনকার সংসদ সদস্য রানা।  কিন্তু বিচারক জামিন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। 

এর পর দুই মামলায় জামিনের আবেদন নিয়ে জেলা আদালত থেকে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত ঘুরতে থাকেন টাঙ্গাইলের এই আওয়ামী লীগ নেতার আইনজীবীরা।

এ মামলার তদন্ত চলাকালে রানার ঘনিষ্ঠ সহযোগী আনিসুর রহমান রাজা ২০১৪ সালের ১১ অগাস্ট এবং মোহাম্মদ আলী ২৪ অগাস্ট গ্রেপ্তার হন।

এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনার সঙ্গে রানার অপর ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি ও টাঙ্গাইল জেলা বণিক সমিতির সভাপতি জাহিদুর রহমান খান কাঁকন জড়িত বলে মোহাম্মদ আলী আদালতে তার জবানবন্দিতে বলেন।

একাদশ সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে সমালোচিত রানার বদলে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হয় তার বাবা আতাউর রহমান খানকে। গত ডিসেম্বরে নির্বাচনে জিতে তিনি ছেলের আসনে এমপি হন।