বরগুনায় কুপিয়ে হত্যার আসামি রিফাত ফরাজী গ্রেপ্তার

বরগুনা শহরে প্রকাশ্য রাস্তায় শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার অন্যতম সন্দেহভাজন রিফাত ফরাজীকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

বরগুনা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 July 2019, 03:50 AM
Updated : 3 July 2019, 05:56 AM

বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের ভায়রার ছেলে রিফাত ফরাজী ওই হত্যাকাণ্ডের প্রধান সন্দেহভাজন সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ডের প্রধান সহযোগী। তার ভাই রিশান ফরাজীকেও পুলিশ খুঁজছে।

পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন জানান, মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে পুলিশের একটি দল রিফাত ফরাজীকে গ্রেপ্তার করে।

তবে তাকে কোথা থেকে কীভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে- সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেননি পুলিশ সুপার।

এই হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি নয়ন মঙ্গলবার ভোরে সদর উপজেলার বুড়ির চর ইউনিয়নের পূর্ব বুড়ির চর গ্রামের পায়রা নদীর তীরে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।

গত ২৫ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা শহরের কলেজ রোডে রিফাত শরীফকে (২৩) স্ত্রীর সামনেই কুপিয়ে জখম করে একদল যুবক। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে রিফাতের মৃত্যু হয়।

রিফাতের ওপর হামলার ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে শুরু হয় আলোচনা। সেখানে দেখা যায়, দুই যুবক রামদা হাতে রিফাতকে একের পর এক আঘাত করে চলেছে। আর তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি স্বামীকে বাঁচানোর জন্য হামলাকারীদের ঠেকানোর চেষ্টা করছেন।

বরগুনার সরকারি কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্রী মিন্নি হামলাকারী সবাইকে চিনতে না পারার কথা জানালেও নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজী ও তার ভাই রিশান ফরাজীর নাম বলেন।

ওই ভিডিওতে কালো শার্ট ও জিন্সের সঙ্গে চোখে কালো সানগ্লাস পরিহিত যে যুবককে রামদা হাতে রিফাত শরীফকে কোপাতে দেখা যায়, তিনিই রিফাত ফারজী বলে স্থানীয়দের ভাষ্য।

রিফাত ফরাজী বরগুনা পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ধানসিঁড়ি রোডের মো. দুলাল ফরাজীর বড় ছেলে। তার বিরুদ্ধে বরগুনা থানায় হামলা, ভাংচুর, চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অভিযোগে কয়েকটি মামলা রয়েছে।

এছাড়া দলবল নিয়ে পুলিশের একজন এসআইয়ের বাসায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর এবং তার স্ত্রীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগেও গ্রেপ্তার হয়েছিলেন রিফাত।

পরিবারের দেওয়া নাম সাব্বির আহম্মেদ হলেও নিজেকে জেমস বন্ড ভাবতে ভালোবাসেন বলে ২৫ বছর বয়সী নয়ন নিজের নাম নেন নয়ন বন্ড। ওই নামেই তিনি বরগুনা শহরে পরিচিত ছিলেন।

জেমস বন্ডের কোড নম্বর ‘007’ এর সঙ্গে মিল রেখে তিনি একটি ফেইসবুক গ্রুপ খুলেছিলেন, যার মাধ্যমে তার সহযোগীদের মধ্যে যোগাযোগ হত। বলা হচ্ছে, ওই ফেইসবুক গ্রুপেই রিফাতকে হত্যার পরিকল্পনা সাজানো হয়।

নয়নের গড়ে তোলা গ্যাং 007 শহরের কলেজ রোড, ডিকেপি, দীঘির পাড়, কেজিস্কুল ও ধানসিঁড়ি এলাকায় নানা ধরনের অপরাধ চালিয়ে আসছিল বলে স্থানীয়দের ভাষ্য।

রিফাত খুন হওয়ার পরদিন তার বাবা দুলাল শরীফ ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় মামলা করেন। সেখানে ১ নম্বরে নয়ন ও ২ নম্বরে রিফাত ফরাজীর নাম ছিল।

অভিযানে নেমে পুলিশ এ পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে, যাদের মধ্যে এজাহরভুক্ত রয়েছেন পাঁচজন।