নেত্রকোণার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শাহজাহান মিয়া জানান, শুক্রবার তাদের আটক করা হয়।
“জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের হেফাজতের (রিমান্ড) আবেদন করে শনিবার তাদের আদালতে হাজির করা হয়েছে।”
আদালতে পাঠানোর আগে গ্রেপ্তারদের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করেছে পুলিশ।
এ সময় শাহজাহান মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসকারি চক্রের ৩২ সদস্যের বিরুদ্ধে শনিবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও পাবলিক পরীক্ষা (অপরাধ) আইনে থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
তিনি বলেন, এই চক্রটি পরীক্ষার হলে পরিদর্শককে ও বাইরে থেকে বিভিন্ন ডিভাইস, মোবাইল ফোন ব্যবহার করে টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন ফাঁস ও পরীক্ষায় অনিয়মে জড়িত।
“পরীক্ষার হলে পরিদর্শক হিসেবে থাকা এই চক্রের সদস্যরা পরীক্ষা শুরুর সাথে সাথে প্রশ্নটা প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাইরে তাদের অন্য সদস্যদের কাছে পাঠিয়ে দেয়। বাইরে থাকা চক্রের অন্যরা দ্রুত প্রশ্নের উত্তর লিখে আবার সেই পরিদর্শকদের কাছে একইভাবে পাঠিয়ে দেয়।”
পরে তারা তাদের নির্দিষ্ট পরীক্ষার্থীদের তা সরবরাহ করে এবং পাশে দাঁড়িয়ে থেকে উত্তর লিখতে সহযোগিতা করে বলে তিনি জানান।
“এভাবে তারা একেক পরীক্ষার্থীকে অন্তত ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ নম্বর পাইয়ে দেয়। এরা ৫ থেকে সাত বছর ধরে এভাবে প্রশ্ন ফাঁস করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল।”
এরা একেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ৪ থেকে ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়ে আসছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে এবং এই চক্রের সাথে জড়িত আরো কয়েকজনকে ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান।
তিনি আরও জানান, শুক্রবার সকালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় চলার সময় উপজেলার টেংগুরি এলাকায় একটি অটো রাইসমিল থেকে ৩০ জনকে আটক করা হয়। পরে তাদের স্বীকারোক্তিতে আরও দুইজনকে আটক করা হয়।
“আটকের সময় তাদের কাছ থেকে ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, ডিভাইস ও প্রিন্টার জব্দ করা হয়েছে।”
আটকদের মধ্যে আটজন প্রাথমিকের শিক্ষিকা, ১১ জন প্রাথমিকের শিক্ষক, দুইজন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসহ বিভিন্ন কলেজের আটজন শিক্ষার্থী রয়েছেন।