সিলেটের পথে ২২ ঘণ্টা পর ট্রেন চালু

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় উপবন এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার ২২ ঘণ্টা পর সিলেটের সঙ্গে সারদেশের রেল যোগাযোগ আবার চালু হয়েছে।

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2019, 03:47 PM
Updated : 24 June 2019, 04:33 PM

বরমচাল স্টেশনের সহকারী মাস্টার রুম্মান আহমেদ জানান, উপবনের দুর্ঘটনা কবলিত পাঁচটি বগি উদ্ধার করে লাইন মেরামত শেষ হয় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে।

“লাইন পরীক্ষা শেষে রাত ৯টা ২০ মিনিটে সিলেট থেকে ‘উদয়ন এক্সপ্রেস’ চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এর পরের নির্ধারিত ট্রেনগুলো সময়মতো ছাড়বে।” 

রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল এলাকায় সিলেট থেকে ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পড়ে সারা দেশের সঙ্গে সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ওই দুর্ঘটনায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন শতাধিক আরোহী।

আন্তঃনগর উপবন এক্সপ্রেস রাত ১০টায় সিলেট ছেড়ে এসে মাইজগাঁও স্টেশনে থামে। এরপর ভাটেরা ও বরমচাল স্টেশন পার হয়ে মোটামুটি ২০০ মিটার যাওয়ার পর পাঁচটি বগি লাইন ছেড়ে বেরিয়ে যায়।

এর মধ্যে একটি বগি বড়ছড়ার কালভার্ট ভেঙে নিচে ছড়ায় পড়ে যায়। আর দুটি বগি উল্টে পড়ে লাইনের পাশের ক্ষেতের মধ্যে।

বরমচাল স্টেশনের সহকারী মাস্টার রুম্মান আহমেদ জানান, ছড়ায় পড়ে যাওয়া বগিটি সেখানে রয়ে গেছে। উল্টে গিয়ে লাইনের পাশের ক্ষেতের মধ্যে পড়া দুটি বগি টেনে পাশে সরিয়ে রাখা হয়েছে। এছাড়া লাইনচ্যুত অপর দুটি বগি কুলাউড়া নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

সংসদে রেলপথ মন্ত্রীর বক্তব্য

এ দুর্ঘটনা নিয়ে সোমবার রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন সংসদে বক্তব্য দিয়েছেন।

দুই সংসদ সদস্য গণফোরামের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান ওই রেল দুর্ঘটনা নিয়ে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে কথা বললে ডেপুটি স্পিকার মন্ত্রীকে ফ্লোর দেন।

বক্তব্যে মন্ত্রী এ দুর্ঘটনা সেতু ভেঙে হয়নি বলে উল্লেখ করে বলেন, ২০১৪ সালের পরে এই প্রথম কোনো একটি রেল দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।

মৃতদেহ স্বজনের কাছে হস্তান্তর

উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত চারজনের মৃতদেহ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নরুল হক জানান, সোমবার দুপুরে ও বিকালে নিহত চারজনের লাশ পুলিশের মাধ্যমে স্বজনরা নিয়ে গেছেন।

নিহতরা হলেন কাওছার আহমদ, ফাহমিদা আক্তার (২০), মনোয়ারা পারভীন (৪৮) ও সানজিদা আক্তার।

নরুল হক বলেন, মনোয়ারা পারভীন মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভার টিটিডিসি এরিয়ার বাসিন্দা আব্দুল বারীর স্ত্রী।

“তিনি রোববার রাতে সিলেটে মেয়ের বাসা থেকে উপবন এক্সপ্রেসে কুলাউড়ায় নিজ বাসায় ফিরছিলেন। তার সঙ্গে মেয়ে ও বোনের মেয়ে ছিলেন। দুর্ঘটনায় ট্রেনের জানালার কাচ ভেঙে উনার মাথা, মুখ ও বুকে আঘাতপ্রাপ্ত হন। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। মেয়ে ও বোনের মেয়ে সামান্য আহত হন।”

নিহত ফাহমিদা আক্তার সিলেটের মোগলাবাজার থানার আব্দুল্লাপুরের আব্দুল বারীর মেয়ে।সানজিদা আক্তার বাগেরহাটের মোল্লার হাট থানার আতজুরি ভানদর খোলা গ্রামের আকরাম মোল্লার মেয়ে।

ফাহমিদা ও সানজিদা সিলেট নার্সিং কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বলে জানিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ ফয়সল আহমদ চৌধুরী।