টারকি মুরগি খামারের নামে ‘প্রতারিত হাজার’ গ্রাহক

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলায় টার্কি মুরগি খামারে মুনাফার প্রলোভনে স্থানীয়দের কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মানিকচন্দ্র বর্মন নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

দিনাজপুর প্রতিনিধিমোর্শেদুর রহমান, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 June 2019, 04:43 PM
Updated : 20 June 2019, 04:43 PM

বৃহস্পতিবার দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সামনে কয়েকশ নারী-পুরুষ মানববন্ধনে এসে মানিকচন্দ্রের শাস্তি দাবি করেন। পরে তারা জেলা প্রশাসক বরাবর একটি স্মারকলিপি দেন।

বীরগঞ্জ উপজেলা সদরের স্লুইস গেট এলাকায় বছর খানেক আগে ‘স্বপ্নতরী এগ্রো সার্ভিসেস লিমিটেড’ নামে প্রতিষ্ঠান যাত্রা শুরু করে। ওই প্রতিষ্ঠানটির ব্যস্থাপনা পরিচালক মানিকচন্দ্র বর্মন।

সম্প্রতি তিনি টার্কি মুরগির খামার প্রকল্পের নামে স্থানীয়দের গ্রাহক বানিয়ে তাদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া হাফিজুল কাদের লাবু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রশাসনের উদাসীনতায় মানিকচন্দ্র বর্মন বিভিন্ন জেলার প্রায় দুই হাজার মানুষের শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদের পথে বসিয়েছে।

“উপজেলা নির্বাহী অফিসারে কাছে লিখিত অভিযোগ এবং থানায় মামলার পরও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না তারা।”

তিনি বলেন, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও নীলফামারী জেলার বিভিন্ন উপজেলার শত শত গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা নিয়ে এখন উধাও মানিকচন্দ্র বর্মন। অফিসও এখন তালাবন্ধ।

ক্ষতিগ্রস্তরা মানিকচন্দ্রকে গ্রেপ্তার এবং তাদের টাকা ফেরত পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।

মানিকচন্দ্রের বিরুদ্ধে একাধিক ব্যক্তি মামলা করেছে জানিয়ে বীরগঞ্জ থানার ওসি শাকিলা পারভীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মানিকচন্দ্র পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে।”

এদিকে বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়ামিন হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মানিকচন্দ্র বর্মনের প্রতারণার শিকার ব্যক্তিরা তার কাছেও লিখিত অভিযোগ করেছেন; কিন্তু তাকে পাওয়া যাচ্ছে না এবং তার মোবাইলও বন্ধ।

ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, বীরগঞ্জ উপজেলা সদরের স্লুইস গেট এলাকায় বছর খানেক আগে ‘স্বপ্নতরী এগ্রোসার্ভিসেস লিমিটেড’ অফিস স্থাপন করে টার্কি মুরগির খামার প্রকল্পের নামে তাদের কার্যক্রম শুরু করে।

প্রকল্পের প্রতি প্যাকেজের মূল্য ২৪ হাজার ৮শ টাকা। গ্রাহকের কাছে ২৪ হাজার ৮শ টাকার বিপরীতে ১২টি টার্কি মুরগির বাচ্চা দেবে এবং তিন মাস পর ৩৩ হাজার ৩শ টাকা মুনাফা দিয়ে তারা মুরগি নিয়ে যাবে।

অধিক মুনাফার লোভে দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও নীলফামারী জেলার প্রায় ১২শ মানুষ এখানে সর্বনিম্ন দুই লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত লগ্নি করে। কিন্তু শর্ত অনুযায়ী মেয়দি পূর্তির পর মানিকচন্দ্র গ্রাহকদের টাকা ফেরত না দিয়ে অফিস বন্ধ রেখে গা ঢাকা দিয়েছেন।

মানিকচন্দ্রের বাড়ি ঠাকুরগাঁও সদরের গড়েয়া এলাকায়।