বুধবার নরসিংদীর পুলিশ সুপার (এসপি) মিরাজ উদ্দিন নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান।
গ্রেপ্তাররা হলেন নিহত গৃহবধূ জান্নাতুল ফেরদৌসি ওরফে জান্নাতির শাশুড়ি শান্তি বেগম ওরফে ফেন্সী রানী (৪৫), স্বামী সাব্বির আহামেদ শিপলু ওরফে শিবু (২৩), ননদ ফাল্গুনী বেগম (২০) ও শ্বশুর হুমায়ন মিয়া (৫০)।
তারা নরসিংদী সদরের চরহাজিপুরের খাসেরচর গ্রামের বাসিন্দা।
নাটোরের নারায়ণপুর পুকুরপাড় এলাকা থেকে মঙ্গলবার রাতে নরসিংদী থানা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেছে বলে এসপি মিরাজ উদ্দিন জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে এসপি মিরাজ উদ্দিন বলেন, পারিবারিক মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ত না করায় জান্নাতুল ফেরদৌসি ওরফে জান্নাতিকে (১৬) পুড়িয়ে হত্যা করে শশুরবাড়ির লোকজন। এ ঘটনায় গত শনিবার ১৫ই জুন নিহতের বাবা শরিফুল ইসলাম সদর মডেল থানায় বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওইদিন রাতেই ৬ জনকে আটক করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্য মতে পুলিশ ও ডিবি পুলিশের একটি চৌকস দল নারায়গঞ্জের রুপগঞ্জ, গাজীপুরের টঙ্গি ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় অভিযান পরিচালনা করে। সেসব স্থানে না পেয়ে নাটোর জেলায় অভিযান চালানো হয়।
“সেখান থেকে মঙ্গলবার রাতে মাদক ব্যবসায়ী শান্তি বেগম ওরফে ফেন্সী রানীসহ হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে বুধবার তাদের আদালতে হাজির করা হয়েছে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, প্রায় এক বছর আগে নরসিংদী সদর উপজেলার হাজিপুর গ্রামের শরীফুল ইসলাম খানের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসি ওরফে জান্নাতির (১৬) সঙ্গে পার্শ্ববর্তী খাসেরচর গ্রামের হুমায়ুন মিয়ার ছেলে শিপলু মিয়ার প্রেম হয়। কিছুদিন পরই পরিবারের অমতে তারা পালিয়ে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই স্বামীর আসল রুপ বেরিয়ে আসে। স্ত্রী জান্নাতিকে পারিবারিক মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ত করতে মাদক ব্যাবসায়ী শাশুড়ি শান্তি বেগম ও স্বামী শিপলু তাকে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। এতে রাজি না হওয়ায় জান্নাতির উপর নির্যাতন শুরু করে তারা।
মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়, চলতি বছরের ২১শে এপ্রিল রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় শান্তি বেগম, ফাল্গুনী বেগম ও শিবু মিলে জান্নাতির শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। ৪০ দিন ৩০ মে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।