নড়াইলে শিক্ষার্থীদের ‘গুলি করার হুমকি’, মামলা দায়ের

নড়াইলে শিক্ষককে লাঞ্ছিতের অভিযোগে ছাত্রদের প্রতিবাদ কর্মসূচি চলাকালে হামলা ও গুলি করে হত্যার হুমকির মামলা হয়েছে চার ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

মাহবুবুর রশিদ, নড়াইল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 June 2019, 04:50 PM
Updated : 17 June 2019, 04:50 PM

সোমবার নড়াইল সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় পাস করা শিক্ষার্থী শহরের ভওয়াখালীর জুলমত খানের ছেলে জাকারিয়া খান (১৬)।

আসামিরা হলেন শহরের মহিষখোলার আবুল হোসেনের দুই ছেলে ঠিকাদার রেজাউল আলম (৪৬) ও কামরুল ইসলাম (৪০), একই এলাকার ঠিকাদার মঈন উল্লাহ দুলু (৫০) ও দুঃখু (৩০)। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার বাদী জাকারিয়া বলেন, অভিভাবক কর্তৃক নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক প্রদেশ কুমার মল্লিক স্যারকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে ও দোষীদের বিচার দাবিতে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গত রোববার (১৬ জুন) সকাল ১০টার দিকে ডিসি অফিস চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন।

“ওই সময় আসামিরা জোটবদ্ধ হয়ে ওই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান। এ সময় প্রকাশ্যে পিস্তল উঁচিয়ে গুলি করে হত্যার হুমকি দেন তারা। এছাড়া আসামিরা শিক্ষার্থীদের চড়থাপ্পড়ও মারেন।

“আসামিদের এ ধরনের কর্মকাণ্ডে শিক্ষার্থীরা দিকবিদিক দৌড়াদৌড়ি শুরু করে। ঘটনার সময় ১ নম্বর আসামি রেজাউল আলম মামলার বাদীকে কপালে পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছেন।”

নড়াইল সদর থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এছাড়া রেজাউল আলমের লাইসেন্স করা পিস্তলটি থানায় জমা নেওয়া হয়েছে। মামলায় হত্যাচেষ্টা ও অস্ত্র আইনের ধারাসহ কয়েকটি ধারা দেওয়া হয়েছে।

নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রদেশ মল্লিক বলেন, গত ১৫ জুন সকালে তার বাসায় শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ানোর সময় লেখাপড়ার বিষয় নিয়ে এক ছাত্রীকে শাসন করেন তিনি। ওই ছাত্রী বাড়ি গিয়ে বিষয়টি তার বাবা মঈন উল্লাহ দুলুকে জানান।

এরপর মঈন উল্লাহ দুলু ওই শিক্ষকের বাসায় গিয়ে তাকে মারধর করেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।

এ ব্যাপারে মঈন উল্লাহ দুলু বলেন, “শনিবার সকাল ৬টার সময় শিক্ষক প্রদেশ মল্লিকের বাড়িতে আমার মেয়ে প্রাইভেট পড়তে যায়। কিছু সময় পড়ে কাঁদতে কাঁদতে সে বাড়ি ফিরে আসে। বাড়ি ফিরে আসার কারণ জানতে চাইলে সে পিট দেখিয়ে বলে স্যার আমাকে মেরেছেন। তখন আমি স্যারের বাড়ি গিয়ে স্যারকে পুলিশে দেওয়ার জন্য ঘর থেকে বের করে নিয়ে আসি। আমি তাকে মারধর করিনি।”

পরে রাস্তায় এলে পরিচিত কয়েকজন তাকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বললে তিনি তাকে ছেড়ে দেন বলে জানান।

এ অবস্থায় কিছু অছাত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে এ সব করায়। জেলা প্রশাসকের সাথে ওই শিক্ষকসহ বসে বিষয়টির সমাধান হয়েছে বলে তিনি জানান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার বিষয়টি জানাজানি হলে নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা ওই অভিভাবকের বিচার দাবিতে গত রোববার সকাল ১০টার দিকে বিদ্যালয়ের সামনে নড়াইল-যশোর সড়ক প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধসহ ডিসি অফিস চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় ডিসি অফিস চত্বরে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের ওপর হঠাৎ করে চড়াও হয় একদল লোক।