অন্তঃসত্ত্বাকে গাছে বেঁধে নির্যাতন: নকলা থানার এসআই প্রত্যাহার

শেরপুরের নকলা উপজেলায় জমির বিরোধের জেরে এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করার অভিযেগে নকলা থানার এসআই ওমর ফারুককে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

শেরপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 June 2019, 06:56 AM
Updated : 14 June 2019, 11:06 AM

এছাড়া এ মামলার এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

জেলার পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজিম বৃহস্পতিবার রাতে প্রত্যাহারের এ আদেশ দেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আমিনুল ইসলাম জানান, এসআই ওমর ফারুককে প্রত্যাহার করে শেরপুর পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এছাড়া এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কামিটি গঠন এবং সময়মত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগে নকলা থানার ওসি কাজী শাহনেওয়াজকে কারণ দর্শাণোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে বলে জানান তিনি ।

গ্রেপ্তার নাসিমা আক্তার নকলা উপজেলার ভুরদি গ্রামের আব্দুল মোতালেবের মেয়ে এবং ডলি খানমের জা।
বুধবার সকালে ওই এলাকা থেকে নাসিমাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে পুলিশ সুপার জানান।

গত ১০ মে সকালে কলা পৌর শহরের কায়দা এলাকায় স্থানীয় গোরস্থান সংলগ্ন এলাকায় তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূর চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে দিয়ে টেনে-হেঁচড়ে জমির পাশের একটি ইউক্যালিপটাস গাছের সঙ্গে হাত বেঁধে  এবং অন্য গাছের সঙ্গে তার দুই পা বেঁধে মারধর করা হয়। ওই পরে মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।    

ওই ঘটনায় গত ৩ জুন শেরপুরের আমলি আদালতে নয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৩/৪ জনকে আসামি করে একটি নালিশী মামলা করেন ওই নারীর স্বামী।

এর জের ধরে ওই অন্তঃসত্ত্বা নারীকে মারধর এবং এর ফলে রক্তক্ষরণে তার গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে যায় বলেও মামলায় অভিযোগ করা হয়। পরে এ ঘটনায় নকলা থানায় মামলা দায়ের করা হয়।    

নাসিমা ছাড়া এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন-  গৃহবধূর ভাসুর আবু সালেহ (৫২), নেছার উদ্দিন (৪৮) ও সলিমুলহ (৪৪), জা লাকী আক্তার (৩৪), পৌর কাউন্সিলর রূপালী বেগম (৩৫), তার স্বামী আমিরুল ইসলাম (৪৫), প্রতিবেশি তাফাজ্জল হোসেন (৪৪) তার ছেলে ইসমাইল হোসেন (২০)।

আসামিরা পলাতক রয়েছেন বলে জানায় পুলিশ।

  বিচারক শরীফুল ইসলাম খান ঘটনা তদন্ত করে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য জামালপুরের পিবিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।  

এদিকে ঘটনার পর নাকলা থানা পুলিশের এসআই ওমর ফারুক নারী কনস্টেবলসহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে তার স্ত্রীকে উদ্ধারের পরও এর ঘটনার কোনো প্রতিকার তারা পাননি বলে মামলার বাদী নির্যাতিতা গৃহবধূর স্বামী সঅংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন।

বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহ বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি আক্কাছ উদ্দিন ভূঁইয়া পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, “ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুন না কেন, ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।“

কোন পুলিশ কর্মকর্তা যদি দায়িত্ব পালনে অবহেলা, উদাসীনতা ও গাফিলতি করে থাকেন তবে তার বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।  

এ সময় শেরপুরের পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজিম ও সহকারী পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত ছিলেন।