গোপালগঞ্জে ৪টি গন্ধগোকুল শাবক উদ্ধার

গোপালগঞ্জে উদ্ধার করা চারটি গন্ধগোকুল শাবক খুলনা বন্যপ্রাণী রক্ষা, উদ্ধার ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।

মনোজ সাহা গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 June 2019, 05:46 PM
Updated : 13 June 2019, 05:46 PM

বৃহস্পতিবার গোপালগঞ্জ বন বিভাগের ফরেস্টার ও ভারপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম খান ছানাগুলো খুলনা বন্যপ্রাণী রক্ষা, উদ্ধার ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের ফরেস্টার মামুন-অর-রশীদের কাছে হস্তান্তর করেন।

এ সময় ওই কেন্দ্রের আরও পাঁচ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

জাহাঙ্গীর আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, কয়েকদিন আগে সদর উপজেলার ঘোষেরচর মধ্যপাড়া গ্রামে এক যুবক একটি তাল গাছে পাতা কাটতে উঠলে শাবকগুলোর মা তাল গাছ থেকে লাফিয়ে পড়ে পালিয়ে যায়। পরে ওই যুবক তাল গাছ থেকে চারটি গন্ধগোকুলের বাচ্চা নিচে নামিয়ে আনেন।

“খবর পেয়ে আমরা  গিয়ে বাচ্চাগুলো উদ্ধার করি। এরপর খুলনা বন্যপ্রাণী রক্ষা, উদ্ধার ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে খবর দেই। সেখান থেকে ৬ সদস্যের একটি টিম গোপালগঞ্জে এসে গন্ধগোকুলের চারটি বাচ্চা নিয়ে যায়।”

খুলনা বন্যপ্রাণী রক্ষা, উদ্ধার ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের ফরেস্টার মামুন- অর-রশীদ বলেন, উদ্ধারকৃত প্রাণীর গায়ের রং ও আকৃতি দেখে গন্ধগোকুল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এদের ইংরেজি নাম এশিয়ান পাম সিভেট (Asian Palm Civet)। আর বৈজ্ঞানিক নাম হলো প্যরাডক্সারাস হারমাফ্রোডিটাস (Paradoxurus Hermaphroditus)।

“এরা মূলত নিশাচর প্রাণী। লোকালয়ের কাছাকাছি ঝোপ-জঙ্গলে বসবাস করতে পছন্দ করে। এরা রাতের বেলায় লোকালয় থেকে মুরগি, কবুতরের বাচ্চা, ফল, সবজি, তাল, খেজুর রস, কীটপতঙ্গ  সংগ্রহ করে জীবনধারণ করে। ইঁদুর ও ফল ফসলের ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে কৃষকের উপকার করে থাকে।”

জাহাঙ্গীর বলেন, উদ্ধারকৃত বাচ্চাগুলোর বয়স ২৫-২৮ দিন হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাচ্চাগুলোর দেহ  ৯ ইঞ্চি লম্বা। লেজের দৈর্ঘ্য প্রায় ১০ ইঞ্চি। গায়ের রং ধূসর। পিঠে ঘার থেকে লেজ পর্যন্ত ঘন লম্বা কালো দাগ রয়েছে। গণ্ধগোকুলেল অন্ধকারে অন্য প্রাণীর গায়ের গন্ধ শুঁকে তাকে চিনতে পারার অসধারণ ক্ষমতা রয়েছে। গন্ধগোকুল সুগন্ধী চালের গন্ধ ছড়ায়। 

উদ্ধারকৃত বাচ্চা গুলো সুস্থ আছে। বাচ্চা অবস্থায় এরা মায়ের দুধ পান করে। ২/৩ মাস লালনপালন করার পর এরা নিজেরাই আহার গ্রহণ করতে সক্ষম হবে। ওই অবস্থায় এলে এদের পরিবেশ বান্ধব স্থানে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

এরা সাধারণত রান্নাঘরের কাঠ রাখার স্থান, বসত ঘরের মাচা, পাকা ভবনের কার্নিশে বাসা বেঁধে বাচ্চা প্রসব করে। এরা তাল খাটাশ, গাছ খাটাশ, ভোন্দর, নোঙর, সাইরেল নামে পরিচিত। তালের রস বা তাড়ি পান করে বলে এদের তাড়ি বা টডি বিড়ালও বলা হয়।