মোয়াজ্জেমকে গ্রেপ্তারের আদেশ পৌঁছল যশোরেও

মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত হত্যাকাণ্ডে আলোচিত ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেপ্তারের আদেশ তার পৈতৃক নিবাস যশোরেও পাঠানো হয়েছে।

যশোর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 June 2019, 04:09 PM
Updated : 13 June 2019, 04:12 PM

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) আনসার উদ্দিন বলেন, “মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানার একটি কপিসহ কিছু নির্দেশনা বুধবার এখানে এসে পৌঁছেছে।”

ফেনীতে হত্যাকাণ্ডের শিকার মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দির ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়ানোয় অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এক মামলার আসামি সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। গত ২৭ মে বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনাল তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। সাইবার ট্রাইব্যুনাল পরোয়ানা জারি করলেও তা তামিল নিয়ে ফেনী ও রংপুর পুলিশের মধ্যে চলে ঠেলাঠেলি।

ইতিমধ্যে বরখাস্ত পলাতক এই কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ।

যশোরে মোয়াজ্জেমের বাড়ি ও তার স্বজনদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলেও জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনসার উদ্দিন।

তিনি বলেন, যশোর শহরের চাঁচড়া ডালমিল রায়পাড়ায় মোয়াজ্জেমদের বাড়িটিতে এখন তার দুই ভাই ও এক বোন মায়ের সঙ্গে বসবাস করেন।

“ঈদের আগে স্বজনদের সঙ্গে কথা হয় মোয়াজ্জেমের। এখন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আসায় বাড়িটি ও তার স্বজনদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে।”

বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল শিগগিরই মোয়াজ্জেমকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছেন।

কারা অধিদপ্তরে এক অনুষ্ঠানের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে ধরা যাচ্ছে না বিষয়টা ঠিক না। তার বাইরে যাওয়ার সব পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সে দেশেই আছে। আর তাকে শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে।"

গত ৬ এপ্রিল সকালে নুসরাত আলিমের আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে গেলে দুর্বৃত্তরা তাকে ডেকে কৌশলে মাদ্রাসার ছাদে নিয়ে যায়। পরে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০ এপ্রিল রাতে তার মৃত্যু হয়।

নুসরাতের মৃত্যুর পরদিন ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, থানায় ওই সময়ের ওসির (মোয়াজ্জেম) সামনে অধ্যক্ষ সিরাজের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তুলে ধরতে গিয়ে অঝোরে কাঁদছেন ওই তরুণী। নিজের মুখ তিনি দুই হাতে ঢেকে রেখেছিলেন।

সে সময় মোয়াজ্জেম ‘মুখ থেকে হাত সরাও, কান্না থামাও’ বলার পাশাপাশি এও বলেন, ‘এমন কিছু হয়নি যে এখনও তোমাকে কাঁদতে হবে’।

ওই ভিডিও ধারণ এবং তা ফেইসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন সৈয়দ সায়েদুল হক নামের এক আইনজীবী।