বাগেরহাটে হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে চেয়ারম্যানসহ ৫৮ জন

বাগেরহাটে আওয়ামী লীগের দুই নেতা-কর্মীকে হত্যার মামলায় এক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, পাঁচ সদস্য ও গ্রাম পুলিশসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযোগপত্র দিয়েছে।

বাগেরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 June 2019, 12:29 PM
Updated : 13 June 2019, 12:29 PM

গত মঙ্গলবার বাগেরহাটের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সমীর মল্লিকের আদালতে ওই অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোরেলগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ঠাকুর দাস মন্ডল। মামলায় ৮০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।

অভিযোগপত্রের ৫৮ আসামির মধ্যে ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল ফকিরসহ ২৪ জন গ্রেপ্তার আছেন। বাকিরা পলাতক।

২০১৮ সালের ১ অক্টোবর বিকালে মোরেলগঞ্জ উপজেলার দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন পরিষদে বসে ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী দিহিদার (৫৩) ও আওয়ামী লীগ কর্মী শুকুর শেখকে (৪২) কুপিয়ে, পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়।  

তিনদিন পর (৪ অক্টোবর) শুকুর শেখের ভাই ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে ৩০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মোরেলগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

তদন্ত কর্মকর্তা ঠাকুর দাস বলেন, আওয়ামী লীগের স্থানীয় রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম ফকির ও ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী দিহিদারের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। সেই বিরোধের জেরে ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর শহীদুল ইসলাম ফকির ও তার সহযোগীরা আওয়ামী লীগের দুই নোকর্মীকে ইউনিয়ন পরিষদে ধরে এনে কুপিয়ে, পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যা করেন।

“আট মাস তদন্তে এ ঘটনায় চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম ফকির, তার পরিষদের পাঁচ মেম্বার, তিন গ্রাম পুলিশ সদস্যসহ মোট ৫৮ জনের সম্পৃক্ততা মিলেছে। এই মামলার আসামি সবাই চেয়ারম্যান শহীদুল ফকিরের অনুসারী।”

তিনি জানান, এই মামলায় মোট ৮০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। গত আট আসে এই মামলায় চেয়ারম্যানসহ মোট ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরা সবাই বাগেরহাট জেলা কারাগারে রয়েছেন। বাকিরা পালিয়ে যাওয়ায় এখনও তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তাদের ধরতে পুলিশী অভিযান অব্যাহত আছে।

২০১৮ সালের ১ অক্টোবর বিকালে মোরেলগঞ্জ উপজেলার দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন পরিষদে বসে ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী দিহিদার (৫৩) ও আওয়ামী লীগ কর্মী শুকুর শেখকে (৪২) কুপিয়ে, পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। এছাড়া ইউনিয়ন তাঁতী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক বাবুল শেখকে বাড়ি থেকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে তারা।

ওই সময় চেয়ারম্যান শহীদুল ফকিরের লাইসেন্স করা একটি বিদেশি শটগান, একটি রিভলবার, একটি দেশি তৈরি ওয়ান স্যুটার গান, একটি কুড়াল এবং তিনটি গুলি পুলিশ জব্দ করে।

অভিযোগপত্রের আসামিদের মধ্যে রয়েছেন দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম ফকির, ইউপি সদস্য আজিম, আল আমিন, সুনীল, শ্যাম ও মোদাচ্ছের। দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশের সদস্য আবুয়াল হোসেন ফকির, আবুল শেখ ও জুলহাস ডাকুয়া।

অন্য যাদের আসামি করা হয়েছে তারা সবাই আওয়ামী লীগ দলীয় চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম ফকিরের অনুসারী, দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থক।