ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী জানান, জেলার সদরপুর, ভাঙ্গা, বোয়ালমারী, মধুখালী, সাতৈর, কাটাখালী, শৈলডুবি, মজুমদার বাজার ও যাত্রাবাড়িসহ বেশ কিছু এলাকায় গত বছর থেকে পরীক্ষামূলক ভাবে বারোমাসি হলুদ ও লাল তরমুজ চাষ শুরু হয়।
“হলুদ তরমুজ (কার্নিয়া) ও লাল তরমুজ (সুইট ব্লাক-২) মাত্র ৬০ দিনের মধ্যে চাষ করে ফলন পাওয়া যায়। এর মধ্যে হলুদ তরমুজ মাটিতে আর লাল তরমুজ মাচা পদ্ধিতি ও মাটিতেও চাষ করা হয়।”
স্থানীয় কৃষিবীজ বিক্রেতা তাপস দত্ত প্রথম থাইল্যান্ড থেকে এ তরমুজের বীজ সংগ্রহ করেন। পরে কম পরিশ্রমে এই তরমুজ চাষ করতে পারায় কৃষকদের কাছে তা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
কৃষকেরা বলছেন, গত বছর স্বল্প পরিসরে এই দুই ভিন্নধর্মী তরমুজ চাষ করে বাজারমূল্য ভালো পাওয়ায় তারা লাভবান হয়েছেন। ফলে সামনের বছরগুলোতে এ জাতের তরমুজের চাষ আরও বেশি করবেন তারা।
তিনি বলেন, তাপস দত্ত আমাকে প্রথমে এই বীজ দেন। তিনি অমাদের নানাভাবে মাঠে এসে এ ব্যাপারে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন বলেই এর সুফল পাওয়া সম্ভব হয়েছে। পরে আমিও অন্য কৃষকদের নানাভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেছি, বীজ বোনা, পরিচর্যা কিভাবে করতে হয়।”
ভাঙ্গার সাদিপুর এলাকার কৃষক শেখ জুয়েল বলেন, “আমি দশ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে সুইট ব্লাক-২ তরমুজ চাষ শুরু করি। পাশাপাশি বারোমাসি লাল তরমুজ মাচায় (ব্যালচিং পদ্ধতি) চাষ করেছি বিষমুক্তভাবে। তরমুজটি সুস্বাদু ও দেখতে সুন্দর হওযায় এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বাজারে।”
এ তরমুজ চাষ করতে তার দশ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে জানিয়ে লাভের আশা প্রকাশ করেন জুয়েল।
এদিকে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে থেকে ব্যাপারীরা ট্রাকে করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছে হলুদ ও লাল তরমুজ।
কৃষিবীজ বিক্রেতা তাপস দত্ত জানান, থাইল্যান্ড থেকে সংগ্রহ করা এ বীজ গত বছর কয়েকজন কৃষককে চাষ করতে দেন তিনি। পরে সুফল দেখতে পেয়ে অন্য কৃষকেরা এ ধরনের তরমুজের চাষ শুরু করেন।
তিনি বলেন, “আমি মাঠে গিয়ে প্রত্যেক কৃষককে এ ব্যাপারে সব সময় পরামর্শ দিয়েছি, কখন কী করতে হবে।”
এ তরমুজ বেশি সুস্বাদু হওয়ায় এবং বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা থাকায় এবার থেকে এর চাষ অনেক বাড়বে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বিষমুক্ত হলুদ তরমুজ ও লাল তরমুজ চাষে সরকারের সহযোগিতা পেলে সারা বছর দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করতে পারবেন বলে কৃষকদের প্রত্যাশা।