নিহত মিনু আক্তার (৩৫) কাচপুরের কুতুবপুরের আব্দুল হাসেমের মেয়ে। গত ২১ মে রাত থেকে তার কোনো খোঁজ পাচ্ছিলেন না পরিবারের সদস্যরা।
শুক্রবার দুপুরে সোনারগাঁয়ের মঞ্জুরখোলা এলাকার একিট বিলের মধ্যে বালি চাপা অবস্থায় মিনুর লাশ পাওয়া যায় বলে র্যাব-১১ এর অ্যাডজুটেন্ট আলেপ উদ্দিন জানান।
তিনি বলেন, মিনুকে হত্যার অভিযোগে তার সাবেক স্বামী জুনায়েদ আহমেদকে (৪০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
কাচপুরে একটি ব্যাটারি ফ্যাক্টরিতে কাজ করার সময় মিনুর সঙ্গে জুনায়েদের পরিচয় হয়। পরে তাদের সম্পর্ক বিয়েতে গড়ায়।
এটি ছিল জুনায়েদের দ্বিতীয় এবং মিনুর পঞ্চম বিয়ে। আগের সংসারে মিনুর তিন ছেলে রয়েছে। তবে জুনায়েদের কোনো সন্তান ছিল না।
জুনায়েদ এক বছর আগে মিনুকে তালাক দেন। কিন্তু তিনি পাওনা পরিশোধ না করায় দুজনের মধ্যে কয়েক দফা ঝগড়াঝাটি হয় বলে মিনুর পরিবারের ভাষ্য।
মিনুর মা মদিনা বেগম জানান, গত ২১ মে রাতে একটি ফোন পেয়ে মিনু বাসা থেকে বেরিয়ে যান। এর পর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল।
“আমরা তখন মিনুর খোঁজে জুনায়েদের বাড়ি যাই। কিন্তু আমাদের দেখে জুনায়েদ তার বর্তমান স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে যায় “
মিনু নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তা মা। সেই জিডির ভিত্তিতে পুলিশ জুনায়েদের বাসা থেকে রক্তমাখা লুঙ্গি ও লম্বা চুল উদ্ধার করে। কিন্তু জুনায়েদ লাপাত্তা থেকে যান।
ওই জিডির কপি নিয়ে গত ২৩ মে র্যাব-১১ কার্যালয়ে গিয়ে অভিযোগ করেন মদিনা বেগম। এর ভিত্তিতে র্যাব এ বিষয়ে তদন্তে নামে বলে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক কর্নেল কাজী শামশের উদ্দিন জানান।
তিনি বলেন, মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে তারা গত বৃহস্পতিবার সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল থেকে জুনায়েদকে গ্রেপ্তার করেন।
“র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জুনায়েদ তার সাবেক স্ত্রীকে হত্যা এবং লাশ গুমের কথা স্বীকার করেন। পরে তার দেওয়া তথ্যে মঞ্জুরখোলা বিল থেকে মিনুর বালিচাপা নগ্ন লাশ উদ্ধার করা হয়। তার পোশাক উদ্ধার করা হয় জুনায়েদের বাড়ির পাশের পুকুর থেকে।”
কর্নেল কাজী শামশের বলেন, “স্ত্রীর অনুপুস্থিতিতে জুনায়েদ ২১ মে রাতে সাবেক স্ত্রী মিনুকে বাসায় ডেকে নেয়। সেখানে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় এবং জুনায়েদ গলা টিপে মিনুকে হত্যা করেন।”
এই র্যাব কর্মকর্তা জানান, জুনায়েদ প্রথমে মিনুর লাশ বাড়ির পাশের পুকুরে কচুরিপানার মধ্যে লুকিয়ে রাখেন। ২৩ মে গভীর রাতে পুকুর থেকে লাশ সরিয়ে বিলের মধ্যে গর্ত করে বালি চাপা দিয়ে আসেন।