ঈদসামগ্রী পেয়ে খুশি শার্শার গরিব লোকজন

যশোরের শার্শা উপজেলায় দরিদ্র ও অসহায় লোকজনকে ঈদসামগ্রী দিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বৃত্তশালীরা। ঈদসামগ্রী পেয়ে খুশি হয়েছেন গরিব লোকজন।

বেনাপোল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 June 2019, 12:41 PM
Updated : 3 June 2019, 12:42 PM

যশোর-১ (শার্শা) থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন বলেন, “অসহায় মানুষ যেন ঈদ করতে পারে সেজন্য সরকার তাদের ভিজিএফের চাল দিয়েছে।

“সরকারি সহায়তার বাইরে ধনাঢ্য ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি, চেয়ারম্যান, রাজনৈতিক নেতারাও গরিব-দুঃখী মানুষের হাতে ঈদসামগ্রী তুলে দিচ্ছেন,যাতে তারা আনন্দের সঙ্গে ঈদ উপভোগ করতে পারেন।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পুলক কুমার মণ্ডল জানান, তার উপজেলায় সরকারিভাবে ২৪ হাজার ৭৯১ জন দুস্থ-অসহায় পরিবারে ১৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ২০ হাজার ১৭০ জনের জন্য ৩২ মেট্রিকটনের বেশি এবং

বেনাপোল পৌরসভায় ৪৬২১ জনকে ১৫ কেজি করে ৬৯ মেট্রিকটনের বেশি চাল দেওয়া হয়েছে।

ঈদসামগ্রী পেয়ে খুশি হয়েছেন অনেক অসহায় মানুষ।

বাগআঁচড়া ইউনিয়নের বসতপুর গ্রামের রজব আলির স্ত্রী কহিনুর বিবি (৭৫) বলেন, বছর দশেক আগে স্বামীর মৃত্যুর পর তার জীবনে ঈদ আসেনি। ঈদ আর সাধারণ দিনের মধ্যে কোনো পার্থক্য ছিল না।

“এবার ঈদে সব পাইছি। শেখের বেটি এবার সব করিছে ।”

বাস্তুহীন তাসলিমা ভাড়া বাসায় থাকেন। অন্যের বাড়ি কাজ করে জীবিকা চালান। ৫৫ বছর বয়সী এই নারীর কোনো স্বজন নেই।

সাতমাইল গ্রামের ৭০ বছর বয়সী সহরবানুকে দেখার কেউ নেই। তিনি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নতুন শাড়ি ও শেমাই-চিনি পেয়ে খুব খুশি।

সহরবানু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঈদে কবে নতুন শাড়ি পরিছি বলতি পারব না। তবে এবার পরব।”

টেংরা মাঠপাড়ার ভ্যানচালক রুহুল আমিন (৬৫) ও তার স্ত্রী জামিরন নেছা খুকির (৫৫) একমাত্র মেয়ের বিয়ে হয়েছে গত বছর। তাদের ছেলে নেই। এখন কাজ করে জীবিকা চালানো তাদের জন্য কঠিন।

খুকি বলেন, “এবার ঈদটি নতুন করে এয়েছে। অনেক বছর ঈদ আসেনি। এবার ঈদে শাড়ি-লুঙ্গি পাইছি। শেমাই, চিনি, চাল, টাকা পাইছি।”

জামতলার আব্দুর রহিমের (৬৫) সব সুখ কেড়ে নিয়েছে ক্যান্সার। তিনি নিজে কাজ করতে পারেন না। তার স্ত্রী হোটেলে কাজ করে যা পান তা দিয়েই চালাতে হয় তাদের সংসার। সরকার বয়স্কভাতা দেয় বটে, তা দিয়ে ওষুধ কিনতে হয় বলে জানান রহিম। এবার তারা বহুদিন পর ঈদ করবেন বলে জানান।

বসতপুর গ্রামের সুরুজ মিয়ার বিধবা স্ত্রী মঞ্জুরা বিবি (৭৫) বলেন, "ছেলেরা ভ্যান চালায় খায়, তাদেরই চলে না। তারা আমারে দেখপে কী করে? শেখ হাসিনার দেওয়া বিধবা ভাতা পাই, মাসিক চাল পাই, তা দিয়ে চলে। এবার ঈদি সব পাইছি। শেখ হাসিনা বেঁচে থাক এই দুয়া করি।"