ডাক্তারের পিটুনিতে আহত, আতঙ্কিত শিশু

খতনা করানোর সময় কান্নাকাটি করায় পাঁচ বছরের এক শিশুকে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে বগুড়ার এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।

জিয়া শাহীন বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 June 2019, 04:49 PM
Updated : 2 June 2019, 05:00 PM

শনিবার বগুড়ায় সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।

এরপর থেকে নার্সারি শ্রেণির এই শিশু বাইরের কাউকে দেখলে আতঙ্কিত হয়ে উঠছে বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।

শিশুটির মামাবাড়ি বগুড়া শহরের মালতিনগর এলাকায়। ঈদে মামার বাড়ি বেড়াতে যাওয়ার পর তার খতনার আয়োজন করা হয়।

শিশুটির স্বজনরা জানিয়েছেন, আয়মানের মা মিশু কয়েকদিন আগে তার এক খালা সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহানা পারভিন বকুলের মাধ্যমে আয়মানকে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার নজরুল ইসলাম ফারুককে দেখান। ডাক্তার শনিবার সকালে খতনা করার সময় ঠিক করেন।

ওইদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আয়মানকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। সেখানে অপরাজিতা নামে ঢাকার ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজের এক ছাত্রী, নার্স বকুল ও অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। লোকাল অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে ডা. ফারুক অপারেশন শুরু করেন।

অপারেশনে থাকা অন্যদের বরাত দিয়ে শিশুটির বাবা সাংবাদিকদের বলেন, ঠিকমতো অবশ না হওয়ায় আয়মান নড়াচড়া ও কান্নাকাটি করছিল। এ সময় ডা. ফারুক ক্ষিপ্ত হয়ে শিশুটির গালে ছয় থেকে সাতটি চড়-থাপ্পড় ও উরুতে নখের আঁচড় দেন। এ সময় সেখানে থাকা নার্সসহ অন্যরা অনুরোধ করেও ওই চিকিৎসককে শান্ত করতে পারেননি।

এ সময় তিনি নার্স ও অন্যদের ওটি থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। পরে আবার লোকাল অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার পর খতনা করানো হয় বলে জানান তিনি।

“আয়মান অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হওয়ার পর আমাদের জানায়- আর কখনও ওই ডাক্তারের কাছে যাব না, ডাক্তার মারে।”

রোববার এ ঘটনা ফেইসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

ওই চিকিৎসক মানসিকভাবে অসুস্থ বলে মনে করেন এই শিশুর বাবা।

তিনি আরও বলেন, “আয়মানকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পর রাতে সে ঘুমাতে পারেনি। নতুন কাউকে দেখলে আঁতকে উঠছে, ভয় পাচ্ছে।”

তিনি ওই চিকিৎসকের বিচার চেয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এটিএম নুরুজ্জামান ও আরএমও ডা. শফিক আমিন কাজলের কাছে অভিযোগ করেছেন। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে তিনি ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।

শিশুটির মাও ওই চিকিৎসকের শাস্তি দাবি করেছেন।

হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার নজরুল ইসলাম ফারুকের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) শফিক আমিন এ প্রসঙ্গে বলেন, ঘটনাটি খুবই অন্যায় ও দুঃখজনক। শিশুর স্বজনদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। ওই চিকিৎসককে ডেকে সাবধানও করে দেওয়া হয়েছে।

“এ ঘটনায় আমরা খুবই বিব্রব। আমি ও তত্ত্বাবধায়ক তাকে ডেকে সাবধান করেছি এবং শিশুর পরিবারের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছি।”