রোববার দুপুরে উপজেলার সোনারায় ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ভিজিএফের চাল বিতরণের সময় এই সংঘর্ষ হয় বলে পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছে।
আহত হয়েছেন সোনারায় ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি দোলন চন্দ্র রায় (৩৩)। তাকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার সকাল থেকে সোনারায় ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ভিজিএফের চাল বিতরণ কার্যক্রম চলছিল। দুপুরের দিকে ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মজিবুল ইসলাম ও ৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি দোলন চন্দ্র রায়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়, এবং এক পর্যায়ের দুপক্ষের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
ইউনিয়ন যুবলীগ নেতাকর্মীরা জানান, সোনারায় ইউনিয়নে দুঃস্থ ও দরিদ্র মানুষের জন্য মোট পাঁচ হাজার ৮৬১টি ভিজিএফ কার্ডের মধ্যে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের মাধ্যমে বিতরণের জন্য ৪৭২টি কার্ড বরাদ্দ দেন ইউপি চেয়ারম্যান। এই ৪৭২টি কার্ডের মধ্যে ইউনিয়নের নয়টি ওয়ার্ড যুবলীগের জন্য ৫৪টি বরাদ্দ দেয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ।
যুবলীগ নেতাকর্মীরা আরও বলেন, ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মজিবুল ইসলাম ওই ৫৪টি কার্ড ইউনিয়ন সাত ওয়ার্ডের যুবলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে দেন। বাকি ৫ নম্বর ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদককে কার্ড দেননি।
সোনারায় ইউনিয়ন যুবলীগের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি দোলন চন্দ্র রায় সাংবাদিকদের বলেন, রোববার চাল বিতরণ করার কথা; তাই শনিবার রাতেই প্রত্যেক ওয়ার্ডের জন্য ছয়টি করে কার্ড বরাদ্দ হয়।
“রোববার সকাল থেকে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে চাল বিতরণ শুরু হলেও বরাদ্দকৃত কার্ড আমার হাতে না পৌঁছেনি। ওয়ার্ড কমটিরি অন্যান্য নেতারাসহ বিষয়টি জানার জন্য দুপুরের দিকে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে গিয়ে ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতির কাছে গিয়ে জানতে গিয়েছিলাম কী করাণে আমার ওয়ার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।”
দোলন বলেন, “এনিয়ে মজিবুল ও তার লোকজন মিথ্যা অভিযোগ এনে আমার উপর চড়াও হয়ে এক পর্যায়ে এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি মারতে থাকে আমাকে। পরে স্থানীয় লোকজন আমাকে উদ্ধার করে ডোমার উপজেলা হাসাপাতালে ভর্তি করেন।”
এ বিষয়ে ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মজিবুল ইসলাম বলেন, “দোলন চন্দ্র রায় দলীয় পরিচয় ব্যবহার করলেও সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার বিপক্ষে কাজ করেছেন। এজন্য তাকে কোনো কার্ড দেওয়া হবে না বলে দলীয় সিদ্ধান্ত তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
“কিন্তু রোববার চাল বিতরণ চলাকালে লোকজন নিয়ে এসে বিশৃঙ্খলা শুরু করলে দলের অন্যান্য নেতাকর্মীরা তার উপর চড়াও হলে সে পালিয়ে যায়।”
সোনারায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, সকাল থেকে পরিষদ চত্বরে ভিজিএফের চাল বিতরণ চলছিল। দুপুরের দিকে ইউনিয়ন পরিষদের অদূরে ভিজিএফের কার্ড বরাদ্দের হিস্যা নিয়ে ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মজিবুল ইসলাম ও ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি দোলন চন্দ্র রায়ের মধ্যে প্রথমে বাকবিতণ্ডা হয় এবং এক পর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পরে স্থানীয় লোকজনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
ডোমার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বিশ্বদেব রায় বলেন, “ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড যুবলীগের অভ্যান্তরীণ কোন্দলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। তবে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।”