‘দেশের ১ নম্বর মাদক চোরাকারবারি’ সাইফুল কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাষায় ‘দেশের ১ নম্বর মাদক চোরাকারবারি’ সাইফুল করিম গ্রেপ্তার হওয়ার পর কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের অভিযানের মধ্যে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। 

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 May 2019, 05:27 AM
Updated : 31 May 2019, 05:29 AM

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে টেকনাফ স্থলবন্দর সংলগ্ন এলাকায় গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে বলে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশের ভাষ্য।

৪৫ বছর বয়সী সাইফুল করিম টেকনাফ সদর ইউনিয়নের শিলবুনিয়া পাড়ার ডা. মোহাম্মদ হানিফের ছেলে।

পুলিশ বলছে,স্বারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর করা মাদক চোরাকারবারির তালিকায় সাইফুলের নাম ছিল ১ নম্বরে। তিনিই  ১৯৯৭ সালে ইয়াবার প্রথম চালান দেশে এনেছিলেন। স্থানীয়ভাবে তাকে বলা হত ‘ইয়াবার গড ফাদার’।

মাদকের কারবারে রাতারাতি ধনী হয়ে ওঠা সাইফুল কক্সবাজার জেলা থেকে সর্বোচ্চ কর দিয়ে সিআইপি মর্যাদাও পেয়েছিলেন।

টেকনাফ ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানার অস্ত্র ও মাদক আইনের সাতটি মামলার পলাতক আসামি সাইফুলকে দীর্ঘদিন ধরে ‘খোঁজা হচ্ছিল’ বলে পুলিশের ভাষ্য।

তবে গত ফেব্রুয়ারিতে কক্সবাজারে যে ১০২ জন মাদক চোরাকারবারি আত্মসমর্পণ করেছিলেন, তাদের মত সাইফুলও আত্মসমর্পণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন এবং পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বলে এক দিন আগে সংবাদপত্রে খবর আসে।

টেকনাফের ওসি প্রদীপ বলেন, ‘ইয়াবা গডফাদার’ সাইফুল টেকনাফ সদরে অবস্থান করছেন খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে থানায় নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

“জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুল স্বীকার করে যে, কয়েক দিন আগে নাফ নদী দিয়ে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় করে মিয়ানমার থেকে ইয়াবার একটি বড় চালান সে এনেছে। টেকনাফ স্থলবন্দরের নাফ নদী লাগোয়া সীমানা প্রাচীরের শেষ প্রান্তে লুকিয়ে রাখা হয়েছে ইয়াবার ওই চালান।”

ওসির ভাষ্য অনুযায়ী, জিজ্ঞাসাবাদে ওই তথ্য পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে সাইফুলকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশের একটি দল টেকনাফ স্থলবন্দর সংলগ্ন ওই এলাকায় ইয়াবা উদ্ধারে অভিযানে যায়।

“তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছানো মাত্র সাইফুলের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে শুরু করে। পুলিশও তখন আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। গোলাগুলির শব্দ শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে পুলিশ গুলি ছোড়া বন্ধ করে।

“এ সুযোগে সাইফুলের সহযোগী ইয়াবা ব্যবসায়ীরা গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যায়। এরমধ্যে কোনো এক সময় সাইফুল গুলিবিদ্ধ হয়।”

গুলিবিদ্ধ সাইফুলকে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পারমর্শ দেন। পরে কক্সবাজারে পৌঁছালে সদর হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান ওসি প্রদীপ।

তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে নয়টি বন্দুক, ৪২টি গুলি এবং ১ লাখ ইয়াবা পেয়েছে পুলিশ।

এ অভিযানে আহত পুলিশের এসআই রাসেল আহমেদ, কনস্টেবল ইমাম হোসেন ও কনস্টেবল মো. সোলেমানকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।