রোববার নড়াইলের বিচারিক হাকিম আমাতুল মোর্শেদা এ আদেশ দেন।
আসামি এএসআই মো. সাইফুল্লাকে ঢাকার আশুলিয়া থানায় কর্মরত থাকা অবস্থায় প্রত্যাহার করা হয়েছিল বলে তার স্ত্রী বলেছেন।
গত ৩১ মার্চ নড়াইলের আদালতে সাইফুল্লার বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা দায়ের করেন তার স্ত্রী।
মামলার নথির বরাত দিয়ে বাদীর আইনজীবী উত্তম কুমার ঘোষ বলেন, ২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবর গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার নিজামকান্দি গ্রামের শাহিদুল ইসলামের ছেলে সাইফুল্লার বিয়ে হয় নড়াইলের নড়াগাতি উপজেলার পাটনা গ্রামের এই মেয়ের সঙ্গে। তাদের একটি ছেলে রয়েছে।
‘যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার’ হওয়ায় আইনে বাধ্যবাধকতার কারণে এখানে সাইফুল্লার স্ত্রীর নাম প্রকাশ করা হলো না।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, বিয়ের কিছুদিন পর থেকে সাইফুল্লা যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করেন। এ কারণে শ্বশুরের পরিবার সাইফুল্লাকে মোটরসাইকেল কিনে দেয়। এরপর ঢাকায় জমি কেনার জন্য পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন।
টাকা দিতে না পারায় গত ২ জানুয়ারি সকালে স্ত্রীকে ঢাকার বাসায় শারীরিক নির্যাতন করেন এবং ১৩ মাস বয়সী শিশু সন্তানসহ স্ত্রীকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
আইনজীবী উত্তম বলেন, এ সব ঘটনায় ৩১ মার্চ তার স্ত্রী বাদী হয়ে মামলা করেন এবং এরপর মীমাংসার শর্তে গত ২৫ এপ্রিল আদালত সাইফুল্লার অন্তর্বর্ন্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করে।
সেই অনুযায়ী গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল জজ কোর্ট এলাকায় বাদী ও বিবাদীসহ দুই পক্ষের আত্মীয়-স্বজন, পিপি ও আইনজীবীর উপস্থিতিতে সন্তানসহ স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে যান সাইফুল্লা।
অ্যাডভোকেট উত্তম বলেন, এরপর পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে গত ৬ মে রাতে সাইফুল্লা স্ত্রীকে আবার নির্যাতন করে ঘরে আটকে রাখেন। এ খবর পেয়ে স্ত্রীর ভাই ও ভাবি গত ৭ মে তাকে স্বামীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে নড়াইলের কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ সময় তাদের শিশু সন্তানকে সাইফুল্লা জোর করে রেখে দেন বলে স্বজনরা অভিযোগ করছেন।
উত্তম আরও বলেন, এ ঘটনায় সাইফুল্লার স্ত্রী নড়াইলের আদালতে সন্তান উদ্ধারের জন্য মামলা করেন। এছাড়া মীমাংসার শর্ত ভঙ্গ করায় গত ১৬ মে আদালতে সাইফুল্লার অন্তর্বর্তীকালীন জামিন বাতিলেরও আবেদন করেন স্ত্রী।
এই মামলার শুনানি শেষে রোববার সাইফুল্লাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত।
এ ব্যাপারে সাইফুল্লার স্ত্রী তার শরীরে নির্যাতনের চিহৃ দেখিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “আমার স্বামী চরমভাবে আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে। তার যথাযথ শাস্তি দাবি করছি। আমাকে নির্যাতনের কারণে তাকে ঢাকার আশুলিয়া থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ ব্যারাকে নিয়েছে। তবুও নমনীয় হয়নি সাইফুল্লাহ।
“আমি আমার শিশু সন্তানকে ফিরে পেতে চাই।”