অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রস্তুত সেমাই-চানাচুর

আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে ঢাকার সাভারে সেমাই, চানাচুরসহ বিভিন্ন খাবার তৈরির কারখানাগুলোতে যেনতেনভাবে চলছে উৎপাদন কাজ।

সেলিম আহমেদ সাভার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2019, 05:41 PM
Updated : 18 May 2019, 05:41 PM

এসব কারখানায় প্রতিনিয়ত অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে কাপড়ের রং মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে লাচ্ছা সেমাই, চানাচুর, সন্দেশ, ছানাসহ বিভিন্ন শিশুখাদ্য।

সাভার থেকে উৎপাদিত এসব খাদ্যপণ্য প্রতিদিন বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে। নিম্নমানের ডালডা আর পোড়া তেল দিয়ে ভাজা সেমাই এবং শিশুখাদ্যে মান নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআইয়ের কোনো অনুমোদন নেই।

কোনো কোনো সময় সরকারি কর্মকর্তারা এসব কারখানায় পরিদর্শনে গেলেও মালিকের সঙ্গে দেখা করে ফিরে যান বলে এসব কারখানার কয়েকজন শ্রমিকের ভাষ্য।

শনিবার সরেজমিনে সাভার বাজারের কাছে আড়াপাড়া মহল্লায় ‘বাবলু ফুড’ ও ‘নাজমা চানাচুর’ কারখানায় গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে।

বাবলু ফুড কারখানায় দেখা যায়, সেমাই তৈরির জন্য খামির (প্রক্রিয়া করা ময়দা) রাখার ট্রের উপর বসে কিংবা হাঁটাহাঁটি করে কাজ করছে শ্রমিকরা। শ্রমিকদের হাত থেকে শরীরের ঘাম সেমাইয়ের উপর গড়াচ্ছে। নিম্নমানের ডালডা ও পোড়া তেলে তৈরি হচ্ছে শত শত মন সেমাই। ময়লা, গাদ ও দুর্গন্ধযুক্ত ট্রে এবং কাদাযুক্ত মেঝে পরিষ্কার করার কোনো উদ্যোগ নেই মালিকপক্ষের।

পাশের নাজমা চানাচুর কারখানারও একই চিত্র। কাপড়ের রং মিশিয়ে তৈরি চানাচুর মেঝেতে ফেলে তার উপর দিয়ে হাঁটাচলা করছে শ্রমিকরা। এসব ময়লা চানাচুর পরে প্যাকেটজাত করে বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে। 

ইসমাইল হোসেন নামে সেমাই তৈরির এক কারিগর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা এভাবেই সেমাই তৈরি করি। সাভারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এ সেমাই সরবরাহ করা হয়। প্রশাসনের কেউ আসলে মালিকের সাথে যোগাযোগ করে চলে যায়।”

বাবলু ফুড লাচ্ছা সেমাই কারখানার মালিক বাবুল হোসেন দেওয়ান অস্বাস্থ্যকর, নোংরা পরিবেশে সেমাই তৈরি এবং কোনো অনুমোদন না থাকার কথা স্বীকার করে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন।

নাজমা চানাচুর কারখানার মালিক নান্নু দেওয়ান চানাচুরের প্যাকেটে বিএসটিআইয়ের সিল দেওয়ার বিষয়ে অনুমোদনের কথা বললেও কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। এছাড়া নোংরা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চানাচুর তৈরির কথা তিনি অকপটে স্বীকারও করেন।

সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজুর রহমান অনুমোদনবিহীন কারখানা দুটির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন।

এ প্রসঙ্গে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আমজাদুল হক বলেন, এধরনের খাবার খেলে ফুড পয়জনিং, ডায়রিয়া, পেটের পীড়াসহ মারাত্মক অসুখ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এধরনের নোংরা ও অস্বাসস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি খাবার না খাওয়াই ভালো।