বাগেরহাটে বিশুদ্ধ পানির সংকট

উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের পাঁচটি উপজেলায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে; ভূগর্ভস্থ পানি না মেলায় চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে গিয়ে সুপেয় পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে এসব এলাকার বাসিন্দাদের।

বাগেরহাট প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 May 2019, 08:30 AM
Updated : 14 May 2019, 08:30 AM

সরজমিনে দেখা গেছে. মোংলা, রামপাল, মোরেলগঞ্জ, কচুয়া ও চিতলমারী উপজেলার বাসিন্দাদের ভূ-উপরিস্থ পুকুরের পানি অথবা বৃষ্টির পানির উপর নির্ভর করতে হয়।

ওই পাঁচ উপজেলার অনেক পুকুরের পিএসএফ (পন্ড স্যান্ড ফিল্টার) অকেজো পড়ে আছে। ফলে বাসিন্দাদের কয়েক কিলোমিটার দূরে কচুয়া উপজেলা সদর, রামপাল উপজেলার জলকুড় দিঘি, রামপাল উপজেলা সদর প্রসাশনের দিঘি ও মোংলা উপজেলা মিঠাখালী থেকে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে।

এ সমস্যা সমাধানে নতুন পুকুর খনন করে সুপেয় পানি সরবরাহ করার কাজ চলছে বলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ থেকে দাবি করা হলেও লবণাক্ত হওয়ায় ওই সব পুকুরের পানি পান করা যায় না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

বাধাল ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সেলিম শেখ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের এলাকায় গভীর নলকূপ বসে না, কয়েক জায়গায় অগভীর নলকূপ থাকলেও সে পানি খাওয়া যায় না। পুকুরে পিএসএফ থাকলেও তা অকেজো হয়ে পড়ে আছে। তাই অনেক দূর থেকে পানি সংগ্রহ করতে হয়।”

কচুয়া উপজেলার সাংদিয়া গ্রামের সুব্রত মুখার্জী বলেন, সাংদিয়া গ্রামে জেলা পরিষদের মালিকানাধীন দুটি পুকুর রয়েছে। এই পুকুর থেকে সাংদিয়াসহ আশপাশের আরও অন্তত তিনটি গ্রামের মানুষ খাবার পানি সংগ্রহ করে।

“সম্প্রতি এই পুকুর দুটি খনন করা হয়েছে। এর মধ্যে একটিতে পানি নেই। আর অন্যটি খনন করে তাতে নদীর লবণ পানি তোলা হয়েছে। এই গ্রামের মানুষকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূর থেকে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। আমাদের এই দুর্ভোগ দেখার কেউ নেই।”

বাগেরহাটের  জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম শামীম আহমেদ জানান, রামপাল, মোংলা, মোরেলগঞ্জ, কচুয়া ও চিতলমারী এই পাঁচটি উপজেলায় গভীর নলকূপ দিয়ে ভূগর্ভস্থ পানি ওঠে না। তিন বছর আগে এসব এলাকার এক হাজার ফুট নিচে পাইপ বসিয়েও পানির স্তর পাওয়া যায়নি। তাই এলাকার মানুষদের জন্য পুকুর অথবা বৃষ্টির পানিই সুপেয় পানির একমাত্র উৎস।

তিনি বলেন, “এই উপকূলীয় এলাকার মানুষদের নিরাপদ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে সরকার দুটি প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০৮টি পুকুর খনন করছে। জুনে এসব পুকুরের খননকাজ শেষ হবে।”

কাজ শেষ হলে এই এলাকার মানুষের নিরাপদ পানির সংকট অনেকটাই লাঘব হবে বলে তার আশার কথা জানান এই প্রকৌশলী।