গোপালগঞ্জে শ্রমিকের অভাবে মাঠের পাকা ধান নিয়ে কৃষক বিপাকে

গোপালগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় কৃষি শ্রমিকের অভাবে মাঠের পাকা ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।

মনোজ সাহা গোপালগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 April 2019, 10:43 AM
Updated : 30 April 2019, 10:44 AM

সদর উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের সমর বিশ্বাস বলেন, “ধানকাটা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিক সংকট শুরু হয়েছে। ক্ষেতের পাকা ধান নিয়ে এখন অনিশ্চয়তায় পড়েছি। এছাড়া ধানের দামও কমে গেছে।

“এখন প্রতিমণ ধান ৪২০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেড় থেকে দুই মণ ধান বিক্রি করে একজন শ্রমিকের পারিশ্রমিক দিতে হচ্ছে। এতে আমাদের তেমন কিছুই থাকছে না।”

বোড়াশী গ্রামের কৃষক এঞ্জেল মিয়া বলেন, “সার, বীজ, কীটনাশক ও শ্রমিক দিয়ে এক বিঘা জমিতে ধান চাষে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন ধান কাটতে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ঝড়-বৃষ্টির ভয় আছে। সরকার কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনের ব্যবস্থা করলে আমরা সহজে ধান ঘরে তুলতে পারতাম।”

শ্রমিক সংকটে শেষ পর্যন্ত ধান ঘরে তুলতে পারবেন কি না সেই অনিশ্চয়তার কথা জানালেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গুয়াধানা গ্রামের কৃষক সরোজ কান্তি।

তিনি বলেন, “এখন আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে ধান কাটছি। ধান কাটতে একটি খরচ আছে। ধান বিক্রি করেই এ খরচ মেটানো হয়। এখন ধানের ব্যাপক দরপতন ঘটেছে।

“এ সুযোগে ফড়িয়া ও মহাজনরা পানির দামে ধান কিনে মজুদ কর লাভবান হচ্ছে। সরকার যদি আমাদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনে তাহলে আমাদের লাভ হত।”

খুলনার কয়রা থেকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ধান কাটার কাজ করেন সদর আলীসহ কয়েকজন।

সদর আলী বলেন, “প্রচণ্ড গরমে ধান কাটা, বেঁধে মাথায় করে বাড়ি নেওয়া, পরে মাড়াই করার কাজ। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করতে হয়। কষ্ট আনুযায়ী পয়সা পাওয়া যায় না।

“তাই এ কষ্টের কাজ এখন আর কেউ করতে চায় না। সবাই অন্য পেশায় চলে গেছে। আমরা মুষ্টিমেয় কয়েকজন ধান কাটতে আসি। এ কারণে ধানকাটা শ্রমিক সংকট প্রকট হয়েছে।”

কৃষকের এই সমস্যার বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত ডিডি হরলাল মধু বলেন, কৃষি ফার্মকে যান্ত্রিকীকরণ করা হলে কৃষক এ সমস্যা থেকে রক্ষা পাবে।

আবহাওয়া অনুকূল থাকায় গোপালগঞ্জে এ বছর ৭৭ হাজার হেক্টর জমিতে ভাল ফলন হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এর মধ্যে ৭০ ভাগই হাইব্রিড। ইতিমধ্যে ক্ষেতের ৩০ ভাগ ধান পেকেছে। কৃষক ইতোমধ্যেই ২০ ভাগ পাকা ধান কেটে ঘরে তুলেছে। বাকিটা দ্রুত কাটাই-মাড়াই করতে বলা হয়েছে।